জঙ্গি নাটক করে পশ্চিমা বিশ্ব ও ভারতকে দেখাতে চায় সরকার: ফখরুল

সংগৃহীত ছবি

জঙ্গি নাটক করে পশ্চিমা বিশ্ব ও ভারতকে দেখাতে চায় সরকার: ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করাকে সরকারের ‘সাজানো’ ঘটনা বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, গহিন জঙ্গলের কথা বলে একটি পাড়া থেকে কিছু সাধারণ লোককে জঙ্গি বলে তুলে নিয়ে আসা হয়। এটা তাদের (সরকার) প্রয়োজন আছে। তারা দেখাতে চায়, বাংলাদেশে জঙ্গি আছে, জঙ্গিবাদ আছে, এটা দমন করার জন্য শুধু তাদেরই দরকার।

এটাই হচ্ছে তাদের মূল উদ্দেশ্য। আর এটা তারা পশ্চিমা বিশ্ব এবং ভারতকে দেখাতে চায়।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে দলটির উদ্যোগে এই স্মরণ সভা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাধারণ মানুষ জানে– জঙ্গি হচ্ছে তারা, জঙ্গি হচ্ছে আওয়ামী লীগ, জঙ্গি হচ্ছে এই সরকার। তারা দেশের সাধারণ মানুষের ওপর সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে হত্যা করছে, তাদের অধিকার হরণ করছে। জঙ্গিবাদ সেটাই। এ কথাগুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। এটা সত্য, এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ। এটা তো কোনো পাপ নয়, অপরাধ নয়। সেজন্য যেকোনো মানুষ– যারা ধর্ম পালন করেন তাদের জঙ্গি বানিয়ে ফায়দা হাসিল করে এই সরকার। ’

তিনি বলেন, ‘এমন সময়ে আমরা বাস করছি। এরকম ভয়াবহ অবস্থা আমরা কখনও কল্পনাও করিনি। যে একটা প্রতারণার মধ্যে দিয়ে একটি রাষ্ট্র চলছে। শুধু প্রতারণার কথা শুনিনি, প্রতিটি মুহূর্তে প্রতারণা চলছে। ’

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সেই সময়ে আমরা সবাই সংগ্রামের মাঠে লড়াই করেছি। সেই সময় কাজী জাফর আহমদ ঘোষণা দিলেন, ‘আমি গণতন্ত্রের পক্ষে আছি। গণতন্ত্রের পক্ষে আমি জীবনের শেষ বিন্দু পর্যন্ত লড়তে চাই। ’ তিনি ছিলেন, কিন্তু বেশিদিন থাকতে পারেননি। চরম দুর্ভাগ্য আমাদের এ জাতির চরম সংকটের মুহূর্তে আমরা তাকে পাচ্ছি না। কিন্তু আমরা তার আদর্শকে পাই, কাজগুলোকে পাই। ’

তিনি বলেন, ‘মানুষ কিন্তু প্রতিবাদ করছে। মানুষ জেগে উঠছে। আপনারা অবশ্যই লক্ষ্য করেছেন, ইতোমধ্যে ২২ জন যুবক রাজপথে লড়াই করে জীবন দিয়েছেন। সবাই এগিয়ে আসছে। আমরা যারা সবাইকে গণতন্ত্রের পক্ষে আছি, সবাই একত্রিত হচ্ছি, হয়েছি। যুগপৎ আন্দোলনের বাহিরে যে দলগুলো আছে, আমরা সবাই একমত। এই সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। ’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আবেদন জানাই তরুণদের কাছে, যারা যুবক আছেন তাদের কাছে। কাজী জাফর চলে গেছেন। এখানে আমিসহ যত বয়স্ক মানুষ আছি আমাদের সময় কিন্তু শেষ হয়ে আসছে। আমরা কিন্তু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করছি। কাজী জাফর কিন্তু লড়াই করে গেছেন। সে লড়াই কিন্তু ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থে নয়, লড়াই কিন্তু এ দেশ ও মানুষের জন্যে। ’

জাপার সাবেক চেয়ারম্যান কাজী জাফরের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, তিনি আমাদের নায়ক। আমাদের ফিল্মের হিরো ছিলেন উত্তম কুমার আর রাজনীতির নায়ক ছিলেন কাজী জাফর আহমদ। এ সময় কাজী জাফরের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে হয়ে পড়েন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, একে একে প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। আজকের এই দুর্দিনে তাদের খুব প্রয়োজন ছিল। আজকে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে সমাজে উনাদের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সাবেক মন্ত্রী ও জাপার একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও এস এম এম শামীমের সঞ্চালনায় আয়োজিত ওই সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী নাহিদ, নওয়াব আলী আব্বাস খান, মাওলানা রুহুল আমিন, নজরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

News24bd.tv/AA