একটা সময় ছিল গ্রামে লোকসংগীত, যাত্রাপালা, নাট্য ও পালাগানে হারমোনিয়াম, তবলা দোতারার মতো দেশীয় বাদ্যযন্ত্র শোভা পেত। কিন্তু আধুনিক আর ইলেকট্রনিক বাদ্যযন্ত্রের প্রভাবে পিরোজপুরে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র।
সাংস্কৃতিক কর্মীরা বলছেন, যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার আজ বিলীনের পথে। সঙ্গীত হচ্ছে আত্মার যোগ।
বাদ্যযন্ত্র ছাড়া সঙ্গীতচর্চা অসম্ভব। তবে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের প্রভাব আর যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার আজ বিলীনের পথে।
পিরোজপুর সদরের কলেজ রোডে প্রায় ৫০ বছর ধরে দেশীয় হারমোনিয়াম, তবলা, বাঁশি ও সরোদ তৈরি করে আসছেন কয়েকটি দোকানের কারিগর।
তারা জানান, ১০-১৫ বছর আগের হারমোনিয়াম, তবলা বেচা-বিক্রি ছিল অনেক। তখন প্রতিদিনই কাজের অর্ডার থাকতো। রেডিমেন্ট বা অর্ডার দিয়েও বাদ্যযন্ত্র কিনতেন ক্রেতারা। কিন্তু বর্তমান যুগে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের অধিকাংশই মুখ থুবড়ে পড়েছে ইলেকট্রনিক
গিটার, কিবোর্ড, পিয়ানো, ড্রামসেট, ভায়োলিনের মতো ভিনদেশি বাদ্যযন্ত্রের কাছে। ফলে এ শিল্পে কর্ম কমে গেছে। তাই
জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেক কারিগর বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা।
জেলা উদ্দীচী শিল্পগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক খালেদ আবু জানান, দেশীয় বাদ্যযন্ত্র বাজানো মূলত গুরুমুখী বিদ্যা। যা একজন স্তাদের তত্ত্বাবধানে থেকে আয়ত্ত করতে হয়। কিন্তু এখনকার নতুন প্রজন্ম এত কষ্ট করে কোনো কিছু শিখতে আগ্রহী নয়। তারা তুলনামূলক সহজ হওয়ায় ইলেকট্রিক বাদ্যযন্ত্রের দিকে ঝুঁকছে। দেশীয় সাংস্কৃতি বাঁচাতে যথাযথভাবে এই শিল্পের সংরক্ষণের দাবি আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মীদের।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলছেন, স্থানীয় বিসিক এর মাধ্যমে দেশীয় বাদ্যযন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সঙ্গীতচর্চা ও আয়োজনের বড় অংশ জুড়ে থাকত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র। কালের বিবর্তনে এবং ডিজিটাল সংস্কৃতির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে হারিয়ে গেছে অতীতের অনেক বাদ্যযন্ত্র। তাই দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)