মুইজ্জুর আসন্ন ভারত সফর যে সংকেত দিচ্ছে

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। ছবি: সংগৃহীত

মুইজ্জুর আসন্ন ভারত সফর যে সংকেত দিচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক

শিগগিরই ভারত সফরে যাচ্ছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু। ‘ইন্ডিয়া আউট’ কর্মসূচি দিয়ে নির্বাচনে জিতেছিলেন তিনি। অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত মালদ্বীপের ওপর ভারত ও চীন প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান মুখপাত্র হিনা ওয়ালিদ গত সপ্তাহে জানান, ‘প্রেসিডেন্ট শিগগিরই ভারত সফরে যাবেন।

’ এ বছরের এপ্রিলে মুইজ্জুর সরকার মালদ্বীপে থাকা ভারতের অল্প কয়েকজন নিরাপত্তা সদস্যকে মালদ্বীপ ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর মে মাসে চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে মালদ্বীপ।

এছাড়া বছরের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন মালদ্বীপের দুই উপমন্ত্রী। ভারতের কাছে লক্ষদ্বীপে পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনা করছেন মোদি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই মন্তব্য করেছিলেন মালদ্বীপের মন্ত্রীরা।

এর উত্তরে ভারতের পর্যটকরা মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেন, যেটি পর্যটননির্ভর মালদ্বীপের জন্য মারাত্মক হুমকি ছিল।

সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা?

মুইজ্জুর ভারত সফর কি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা? গবেষণা সংস্থা মন্ত্রয়ার প্রধান শান্থি ম্যারিয়েট ডি’সুজা ডয়চে ভেলেকে বলেন, মুইজ্জুর সরকার আপাতদৃষ্টিতে ভারতের সঙ্গে অনুকূল সম্পর্ক থাকলে যে সুবিধা পাওয়া যায়, সে সম্পর্কে কিছু বাস্তবতা যাচাই করেছে।

তিনি বলেন, ‘এটাকে নীতি পরিবর্তন বলা এখনই ঠিক হবে না, তবে এটা অবশ্যই ভারত-মালদ্বীপের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিবাচক অগ্রগতি। ’ মালদ্বীপ ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য রেখে লাভবান হতে চাইছে বলেও তিনি জানান।

ডি’সুজা বলেন, ‘মোদিকে নিয়ে ঠাট্টা করা দুই উপমন্ত্রীর পদত্যাগ বলে দিচ্ছে মুইজ্জুর নতুন দিল্লির সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। তবে এটি তার চীনপন্থী পক্ষপাতের পরিবর্তে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ’
 
আর্থিক সংকটে মালদ্বীপ

দেশটির ঋণ বাড়ছে, রাজস্বের পরিমাণ কম, রিজার্ভও কমছে, বাজেট ঘাটতিও আছে। সে কারণে আর্থিক সহায়তা খুঁজছে মালদ্বীপ।

মালদ্বীপ চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ুক এটা ভারত চায় না।

তাই গত মাসে দেশটি সফরে গিয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক ভারতের জন্য একটি অগ্রাধিকার বিষয় বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক পি সাহাদেবন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘মুইজ্জুর সরকার তার চীনপন্থী অবস্থান পরিবর্তন না করেও ভারতের প্রতি তার অবস্থান নরম করেছে। ’ মালদ্বীপের অর্থনৈতিক সংকট এর একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি।

অভিজ্ঞ কূটনীতিক অনিল ওয়াধওয়া মনে করছেন, মুইজ্জুর আসন্ন সফর তার ‘ইন্ডিয়া আউট’ অবস্থান থেকে সরে আসার একটি সংকেত। তিনি বলেন, ‘মালদ্বীপ বুঝতে পেরেছে যে ভারতই একমাত্র দেশ, যেটি মালদ্বীপের সংকটে দ্রুত সাড়া দিতে পারে এবং আর্থিক সংকটের সময়ে তাকে উদ্ধার করতে পারে। ’

news24bd.tv/DHL

এই রকম আরও টপিক