পুলিশ সদস্যকে হত্যার দায় কার, ফখরুলকে কাদের

পুলিশ সদস্যকে হত্যার দায় কার, ফখরুলকে কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো সংঘাতে না যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে সভাপতির কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামীকাল ঢাকা সিটির সব ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জমায়েত, বাংলাদেশের সকল জেলা ও মহানগরে কর্মী জমায়েত কর্মসূচি। ৫ আগস্ট রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউশন থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শোক মিছিল করবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অবুঝ শিশু কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় পড়ে না। অবুঝ শিশুকে হত্যা করে, অবুঝ শিশুর তাজা প্রাণ ঝরিয়ে সরকারি দলের কোনো লাভ নেই। ১/২, কয়েকটা শিশুকে মেরে আমাদের কী লাভ? লাভ তাদের, যারা শিশুর লাশ থেকে ফায়দা লুটতে চায়। ইউনিসেফ'কে বলব- ৩২ শিশুর নাম ঠিকানা সহ জানতে চাই।

এটা পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব, সত্য খুঁজে বের করব।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভেদ নয়, ঐক্যে আমরা বিশ্বাসী। যারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, প্রগতিতে বিশ্বাস করেন তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চাই। সাধারণ শিক্ষাথীদের জিম্মি করে দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন, অর্জনকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের প্রতিহত করতে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাসী সকলের সম্মিলিত প্রয়াস আহবান করছি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার। এদেশের মানুষের ভোট ভাতের অধিকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারই ফিরিয়ে এনেছে। আজ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের অপচেষ্টা চালাচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত। তারা জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত ও ব্যর্থ। তারা যে কোনো আন্দোলনকে সরকার বিরোধী আন্দোলনের রূপ দেয়ার চেষ্টায় উন্মক্ত থাকে। এখন কোটা আন্দোলনে ভর করে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনার সরকার ধৈর্য ও সংযমের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সবাই জানে বিএনপি'র সঙ্গে জামাত-শিবিরের সম্পর্ক কতটা নিবিড়। তারা লাশের রাজনীতি করছে। নাশকতা ও উসকানি দিয়ে সহিংসতা করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করছে। গতকাল দুটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল। অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ভাঙচুর অগ্নিসন্ত্রাস করেছে।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই, পুলিশ সদস্যকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার দায় কার? কারা হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করল? আমরা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি, সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব সহিংস আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নয়। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের কোটার দাবি মেনে নিয়েছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশন ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সহ বিশ্বের যারা এ তদন্ত কাজে অংশ নিতে চায় তাদের জন্য দরজা খোলা এ কথা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এখানে জাতিসংঘ যদি যুক্ত হয় তাতে সরকারের আপত্তি নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন গুজব অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশবিরোধী একটি মহল পরিস্থিতি জিইয়ে রেখে ফায়দা লুটতে চায়। যারা দেশকে অকার্যকর ও খাদের কিনারায় নিয়ে যেতে চায়। এই অশুভ শক্তির অশুভ তৎপরতা সফল হতে দিতে পারি না। শিক্ষাথীদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ কামনা করি। কোন পক্ষকে বাদ দিয়ে নয় বরং সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসতে চান, তাদের কথা শুনতে চান। তিনি কোন সংঘাত চান না।  

প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দিন নাসিম,  সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক