বিশাল জয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন অ্যান্ডারসন

অ্যান্ডারসনকে 'গার্ড অব অনার' দিচ্ছেন সতীর্থ এবং বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে 

বিশাল জয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন অ্যান্ডারসন

অনলাইন ডেস্ক

ইংলিশ তারকা পেসার জেমস অ্যান্ডারসন লর্ডসের লং রুম পেরিয়ে যখন শেষবারের মতো মাঠে নামছিলেন, তখন পুরো স্টেডিয়ামের দর্শকরা দাঁড়িয়ে গেলো তার সম্মানে। কারণ সমাপ্ত হতে চলেছিলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের এক কিংবদন্তির অধ্যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১১৪ রান এবং এক ইনিংস ব্যবধানে হারানোর দিনে সতীর্থ ও প্রতিপক্ষের ক্রিকেটাররাও গার্ড অব অনার দিয়েছেন অ্যান্ডারসনকে।

২১ বছর আগে যার শুরুটা হয়েছিল এই লর্ডসেই।

শূন্য থেকে শুরু করে ডানহাতি এই পেসার আজ থামলেন সাদা পোশাকে ১৮৮ ম্যাচে ২৬.৪৫ গড়ে ৭০৪ উইকেট নিয়ে। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় তার সামনে আছেন কেবল শেন ওয়ার্ন (৭০৮) ও মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০)।

ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে হলেও বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন অ্যান্ডারসন। সঙ্গে গাস অ্যাটকিনসনের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ক্যারিবিয়দের গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইংলিশরা।

এর আগে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষেই বোঝা যাচ্ছিলো লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের জয়টা সময়ের ব্যাপার কেবল। সেই সময়ের ব্যাপারটা ইংল্যান্ড আজ তৃতীয় দিন সকালে ১ ঘণ্টার একটু বেশি সময়ের মধ্যেই সেরে ফেললো।

লর্ডস টেস্টকে অনেকেই বলছেন অ্যান্ডারসনের টেস্ট। ৪১ বছর বয়সী ইংলিশ ফাস্ট বোলার আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লডর্সের এই টেস্টটি তার ক্যারিয়ারের শেষ। তাই প্রথম দিন থেকেই ম্যাচটি হয়ে যায় অ্যান্ডারসনের টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ১২১ রানে গুটিয়ে যাওয়া সফরকারীরা দ্বিতীয়ভাগে করতে পারে আর ১৩৬ রান। আর একমাত্র ইনিংস স্বাগতিকরা তোলে ৩৭১ রান। এরপর আর ব্যাট করতে নামতে হয়নি ইংলিশ ব্যাটারদের। কাজটা সেরে ফেলেন বোলাররাই।

নিজের টেস্টের শেষ মুহূর্তটাতেও দাপট দেখিয়েছেন অ্যান্ডারসন। তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হয় ৬ উইকেটে ৭৯ রান থেকে। দিনের ১৪তম ওভারেই উইকেট হারায় তারা। সেই উইকেটটি নেন অ্যান্ডারসন নিজেই। জসুয়া ডি সিলভাকে বলটি অ্যান্ডারসন করেছিলেন কল্পিত চতুর্থ স্টাম্প বরাবর। সেই বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় জেমি স্মিথের গ্লাভসে। এটা নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তার উইকেট দাঁড়ায় ৩টি। প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ১ উইকেট।

এরপর দ্রুতই আলজারি জোসেফ ও সামার জোসেফকে তুলে নেন গাস অ্যাটকিনসন। পরে জেইডেন সিলসের উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। অভিষেক টেস্টে সব মিলিয়ে ১২ উইকেট হয়েছে অ্যাটকিনসনের। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানে নিয়েছেন ৭ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট ৬১ রানে।

শেষদিকে যখন ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য আর মাত্র একটি উইকেট দরকার তখন অ্যান্ডারসনের বলেই একটি ক্যাচ ওঠে তার হাতেই। কিন্তু সেটিকে ধরতে গিয়েও লুফে নিতে পারেননি তিনি। হাসি দিয়ে মাটিতে বসে পড়েন তিনি। লর্ডসের ক্রাউড তখনো অ্যান্ডারসনের জন্য করতালির বন্যা বইয়ে দিচ্ছিলেন। কারণ ইংল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য অ্যান্ডারসনের অবদান ভুলবেন না কেউই।

news24bd.tv/SC