সেন্টমার্টিন নিয়ে উত্তাপ রাজনৈতিক অঙ্গনে

সংগৃহীত ছবি

সেন্টমার্টিন নিয়ে উত্তাপ রাজনৈতিক অঙ্গনে

এফ এ শোভন

নাফ নদ থেকে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজ সরে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন সেন্টমার্টিনবাসী। গেলো দুদিন ধরে শোনা যায়নি কোনো গুলির শব্দও। তবে দ্বীপের আশপাশে এই আতঙ্কের মূলে কারা রয়েছে সে প্রশ্ন এখনও জবাবহীন।

শুক্রবার ভোররাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপের আশপাশে গোলাগুলি এবং মর্টার শেল ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়নি।

তবে উদ্বেগ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি বলছেন বিশ্লেষকরা। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীনসহ বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতারাও।

শনিবার এক বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের গোলাগুলি নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে আক্রান্ত হলে জবাব দেওয়া হবে।

মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংকটের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে ৫৪টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তাদের অভ্যন্তরীণ সংকটে আমরা যদি ভুক্তভোগী হই (সাফার করি) তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।

এদিন সেন্টমার্টিন ইস্যুতে বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সেন্টমার্টিনে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে এবং তারা কী করছেন। আমরা উৎকণ্ঠিত, জনগণ এর উত্তর চায়।

এদিকে, সেন্টমার্টিনকে নিয়ে চলমান সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সরকারের নীরব ভূমিকার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের ভূমিকাকে তিনি নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, সেন্টমার্টিন ইস্যুতে সরকারের আচরণ বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেছেন, জান্তা বাহিনীর এসব অশুভ সামরিক তৎপরতা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। মিয়ানমারের ধারাবাহিক উসকানির মুখে সরকারের নির্বিকার আচরণ বিস্ময়কর।

তবে সেন্টমার্টিনে এই অস্থিরতার মাঝে গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া এক বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। গত বছরের ২৩ জুন সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সেন্টমার্টিন বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি। তবে সেন্টমার্টিন কারও কাছে লিজ দিয়ে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান না বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

ঠিক সেময়েই সেন্টমার্টিন এমন বক্তব্যের জেরে মুখ খোলে যুক্তরাষ্ট্রও। প্রেস ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) কখনোই সেন্টমার্টিন দ্বীপ নেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা করিনি। আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি।

সবশেষ নাফ নদে সেন্টমার্টিনগামী ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় খাদ্য ও নিত্যপণ্য সামগ্রী খালাস করে শতাধিক যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রা করেছে ‘এমভি বার আউলিয়া’ জাহাজ। শনিবার (১৫ জুন) বেলা ১২টার দিকে সেন্টমার্টিন জেটিঘাট থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে যাত্রা করে এই জাহাজটি।

news24bd.tv/FA