আর্থিক সংকট কাটাতে গাঁজাচাষিদের লাইসেন্স দেবে সরকার

আর্থিক সংকট কাটাতে গাঁজাচাষিদের লাইসেন্স দেবে সরকার

অনলাইন ডেস্ক

আর্থিক সংকট কাটাতে গাঁজা চাষ বৈধ করতে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। বিগত কয়েক বছর ধরেই আর্থিক সংকটে ভুগছে দেশটি। সেই সংকট কাটাতে দেশটির সরকার নানামুখী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

তবে শর্ত হলো- এই চাষ হবে মূলত চিকিৎসা ও শিল্প কারখানায় ব্যবহারের উদ্দেশ্যে।

খবর আল জাজিরার।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সরকার ক্যানাবিস কন্ট্রোল অ্যান্ড রেগুলেটরি অথোরিটি (সিসিআরএ) গঠনের লক্ষ্য একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এই কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানে চিকিৎসা ও শিল্প খাতে ব্যবহারের জন্য গাঁজার চাষ, আহরণ, পরিশোধ, গাজার বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য পুনরুৎপাদন এবং ক্রয়- বিক্রয়ের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করবে।

অধ্যাদেশ অনুসারে, সিসিআরএ গঠিত হবে ১৩ সদস্য দিয়ে।

এই কর্তৃপক্ষ মূলত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও বেসরকারি খাতে অংশীদার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হবে। ২০২০ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের সময় এই কমিটি গঠনের বিষয়টি প্রথম উত্থাপিত হয়।

মূলত, বিশ্বজুড়েগাঁজাবৈধ ব্যবহারের বাজারে পাকিস্তানের অংশ নিশ্চিত করতেই সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।  

আয়ারল্যান্ডভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেটসের হিসাব বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বে গাঁজা ও গাঁজাসংশ্লিষ্ট পণ্যের বাজার ৭০০ কোটি ডলার। যা ২০২৭ সালের মধ্যে ৩ হাজার কোটি ডলারের বাজারে পরিণত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাকিস্তানও চায় এই বিশাল বাজারে অংশ হিসেবে নিজে অবস্থান দৃঢ় করে আর্থিক ফায়দা নিতে।

সিসিআরএ গঠনের বিষয়ে এর সদস্য ও পাকিস্তান কাউন্সিল অন সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসাইন আবিদি বলেন, জাতিসংঘের আইন মেনেই এই কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের আইন বলে, যদি কোনো দেশ গাঁজা-সম্পর্কিত পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ক্রয়-বিক্রয় পরিচালনা করতে চায় তবে সেটির একটি ফেডারেল সত্তা থাকতে হবে যা সরবরাহ চেইন নিয়ন্ত্রণ করবে এবং আন্তর্জাতিক সম্মতি নিশ্চিত করবে। তবে সৈয়দ হোসাইন আবিদি পাকিস্তানে গাঁজা চাষের উদ্দেশ্য নিয়ে বলেছেন, পাকিস্তান নিজের স্বার্থে গাঁজাচাষের বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগাতে পারে। গাঁজা এবং এ সংশ্লিষ্ট পণ্য রপ্তানি, এই খাতে বিদেশি বিনিয়োগ এবং অভ্যন্তরীণ বাজের বিক্রয়ের মাধ্যমে পাকিস্তান ‘অনিশ্চিত' বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর লক্ষ্যে রাজস্ব আয় করতে পারে। চাষাবাদ বৈধ করা হলেও এর অপব্যবহার রোধে কঠোর আইনও রেখেছে পাকিস্তান।

যেমন- কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি গাঁজা চাষ সংক্রান্ত কোনো আইন ভঙ্গ করেন তবে ১ কোটি থেকে ২০ কোটি পাকিস্তানি রুপি পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে। এত দিন পাকিস্তানে গাঁজা চাষ আইনত অবৈধ হলেও দেশটি খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে বিপুল পরিমাণ জমিতে গাজার চাষ হতো। এবার সেই বিষয়টিকে নজরদারি ও সরাসরি অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টা নিয়েছে দেশটি।

আবিদি বলেন, গাঁজাচাষিদের পাঁচ বছর মেয়াদে লাইসেন্স দেওয়া হবে। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে অন্তত ৭ লাখ একর জমিতে গাজার চাষ হয় বলেও জানান তিনি।

news24bd.tv/তৌহিদ