বুথিডং, মংডুতে বিদ্রোহীগোষ্ঠীর কারফিউ জারি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ছবি: ইউএনডিপি

বুথিডং, মংডুতে বিদ্রোহীগোষ্ঠীর কারফিউ জারি

অনলাইন ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুথিডং ও মংডুতে কারফিউ জারি করেছে ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান। জান্তা অনুগত মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সংঘাতের মধ্যে গত শুক্রবার কারফিউ জারির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের যে এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সেগুলোতে পরিচালিত হচ্ছে ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান নামে। এটি মূলত একটি রাজনৈতিক সংগঠন।

আরাকান আর্মি ইউনাইটেড লিগ অব আরাকানের রাজনৈতিক শাখা। আরাকান আর্মি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এক টেলিগ্রাম বার্তায় জানায়, বুথিডং, মংডু, আন ও থান্ডওয়েতে জান্তার বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ চলছে। বিশেষ করে বুথিডংয়ে জান্তার মিলিটারি অপারেশন কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে জোর প্রয়াস চালাচ্ছে আরাকান আর্মি।

বিদ্রোহী আরাকান আর্মি অভিযোগ করেছে, জান্তা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সাম্প্রদায়িক উসকানি দিচ্ছে।

অনেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শনিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছিল। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই কারফিউ চলবে। আরাকান আর্মি স্থানীয় বাসিন্দাদের কারফিউ কঠোরভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশনা দিয়েছে।

এদিকে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে বোমা ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত থেকে। গতকাল শনিবার ভোর ৬টা থেকে সীমান্তের ওপারে বোমা-মর্টার বিস্ফোরণ শুরু হয়। নাফ নদের কাছাকাছি বসবাসরত দ্বীপের বাসিন্দারা সন্ধ্যা পর্যন্ত বিকট শব্দ শুনেছে। শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা জোহুরা বেগম বলেন, ‘সকাল থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনেছি। প্রথমে বজ্রপাতের শব্দের মতো মনে হয়েছিল।
পরে মনে হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইনে বোমা ফেলছে। সারা দিন এভাবে চলছে বোমার শব্দ। ভয়ে ঘর থেকে বের হইনি। ’

দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা জেলে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভোরে মিয়ানমারের বোমা ও মর্টার শেলের শব্দে আমার ঘুম ভাঙে। এর আগেও বেশ কয়েকবার এমন শব্দ শোনা গেছে। সারা দিন থেমে থেমে আওয়াজ এপারে ভেসে আসছিল। প্রথম দিকে বিকট শব্দে গ্রামের লোকজন ভয় পেলেও এখন অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ’

সেন্ট মার্টিন থেকেও গতকাল দিনভর মিয়ানমারের ওপারের মর্টার ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এই মৌসুমে দ্বীপে তেমন পর্যটক না থাকায় তাতে তেমন প্রভাব পড়ছে না। সেন্ট মার্টিনের বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহেদ বলেন, সকাল থেকে মর্টার ও গুলির শব্দে দ্বীপবাসী ভয় পেয়েছিল।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন সীমান্তের এপারে বোমা ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা গেছে বলে জেনেছি। সব জায়গার খবরাখবর রাখছি। ’

news24bd.tv/DHL