বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন খাদের কিনারা থেকে তুলে এনে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করেন, ঠিক তখনই শত্রুপক্ষ সদলবলে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতির পিতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি স্থবির হয়ে পড়ে এবং সে সময়টায় দায়িত্ব গ্রহণকারী শাসকরা ইতিহাসের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম নিশানা মুছে ফেলার পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়ে উঠে। তারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। তবে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের বাধা দূর করতে সক্ষম হন এবং বিচারকার্য সম্পন্ন করেন।
দায়িত্ব নিয়েই তিনি পিতার আজীবনের লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার মনোবাসনায় কাজ করে চলেছেন।
স্বাধীনতার ৫১ বছরে বাংলাদেশের অর্জনগুলোর অধিকাংশ আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বাধীন সময়েই হয়েছে। এবং ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর টানা তিনবারের শাসনামলে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং প্রায় সবটাই দৃশ্যমান।
বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে, বিশ্বের ৫০টি অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্রের একটি বাংলাদেশ।
২০০৯ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘দিন বদলের সনদ’ শিরোনামে নির্বাচনী ইশতেহারে স্বপ্ন ছিল রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের। এরপর ২০১৪ সালের সরকার গঠন করে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ স্লোগানে ইশতেহার দিয়ে। গ্রহণ করে ১০টি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প। ২০১৮ সালে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে ইশতেহার প্রণয়ন করে, ২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালে ‘নিরাপদ ব-দ্বীপ’ প্রণয়নের রূপরেখা প্রদান করে। টানা তিন মেয়াদে বর্তমান সরকার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৭৩৩টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে। শত শত প্রকল্পের মধ্যে বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজও শেষ হয়েছে ইতোমধ্যে। বাকি কিছু প্রকল্পের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। আজ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় পর্বে থাকছে ৯ জেলার বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত..
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
গত ১৪ বছরে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেলযোগাযোগ স্থাপনের জন্য পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু, তিস্তা সেতু, পায়রা সেতু, দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু, দ্বিতীয় মেঘনা, দ্বিতীয় গোমতী সেতুসহ শত শত সেতু, সড়ক, মহাসড়ক নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ করেছে সরকার।
এছাড়া ঢাকায় হানিফ ফ্লাইওভার, তেজগাঁও-মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওয়ার, কমলাপুর-শাহজাহানপুর ফ্লাইওভার, বনানী ফ্লাইওভার, টঙ্গীতে আহসানউল্লাহ মাস্টার ফ্লাইওভার, চট্টগ্রামে আক্তারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার ও বদ্দারহাট ফ্লাইওভারসহ বহুসংখ্যক ছোট-বড় ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে।
এক পদ্মা সেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা এবং অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। এই সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, কৃষক ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। ছয় মাসে ২৮ লাখ গাড়ি পারাপার হয়েছে, এতে সরকারের আয় হয়েছে ৪১০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ (প্রথম পর্ব)
এ সরকারই প্রথম ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ, নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা, ঢাকা-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করে। ঢাকা-মাওয়া-জাজিরা এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম এ ধরনের মহাসড়ক। এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক, আরিচা মহাসড়ক এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আগামী বছর যানবাহনের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা পর্যন্ত এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য রেল চালু হয়েছে। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলও শুরু হয়েছে। যমুনা নদীর ওপর রেলসেতু নির্মাণ কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। গত নভেম্বরে একদিন ১০০ সেতু এবং ডিসেম্বরে ১০০ সড়ক উদ্বোধন করা হয়। দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে এ এক অনন্য অর্জন।
২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭১৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে। ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৩ মিটার সেতু নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ, ২১ হাজার ২৬৭ মিটার কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।
গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। শুধু বাংলাদেশেই নয়, চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাতাল সড়কপথ- বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হয় গত মাসেই। পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। যার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ২০১৮ সালের মে মাসে মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছে সরকার। এভাবে একের পর এক মেগা থেকে শুরু করে ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ।
৯ জেলার বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত...
১। বরিশাল
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/borishal.jpg)
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/borishal2.jpg)
২। ব্রাহ্মণবাড়িয়া
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/bbaria.jpg)
৩। বরগুনা
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/borguna.jpg)
৪। চাঁদপুর-ফেনী
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/chadpur-feni.jpg)
৫। ঝালকাটি-ভোলা
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/jhalkhati-bhola.jpg)
৬। কুমিল্লা
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/kumilla.jpg)
৭। মাদারীপুর-শরীয়তপুর
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/madaripir-shoriypur.jpg)
৮। নোয়াখালী-লক্ষীপুর
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/nkhali-lakmsi.jpg)
আরও পড়ুন : উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ (দ্বিতীয় পর্ব)
৯। পটুয়াখালি-পিরোজপুর
![](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2023/nov/পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়/পর্ব-৩/porukhali-pirjpur.jpg)
আগামীকাল থাকছে আরও ৯ জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে চতুর্থ পর্ব...
news24bd.tv/AA