১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ক্রিকেটাররা। দেশের ক্রিকেটে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে জরুরি সভায় বসেছিল বিসিবির পরিচালনা পর্ষদ।
পরে সংবাদ সম্মেলন করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, খেলোয়াড়দের নানা সুযোগ-সুবিধা তো দিচ্ছেনই, ব্যক্তিগত-পারিবারিক সমস্যারও তাঁরা সমাধান করেন।
‘কদিন আগে ইমরুলের শিশুপুত্র মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেশে প্রত্যাশামতো চিকিৎসা হচ্ছিল না বলে বাঁহাতি ওপেনারকে ছুটতে হয় সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে কী ধরনের সহায়তা করেছেন, সেটি জানালেন নাজমুল, ‘অনেকে ব্যক্তিগত সমস্যা আমার কাছে শেয়ার করে।
খেলোয়াড়দের বেতন কীভাবে ৪ লাখ টাকা করা হলো, সেই গল্পও শোনালেন বিসিবি সভাপতি, ‘আমরা যখন (পরিচালনা পর্ষদে) এসেছি, ওদের বেতন ছিল দেড় লাখ টাকা। এটা বাড়িয়ে করলাম আড়াই লাখ টাকা। বেশি দিন আগের কথা না, শ্রীলঙ্কায় সিরিজ খেলে আসছে; মাশরাফি আর তামিম দুজন আমাকে লাউঞ্জে বলছে, বেতনটা বাড়িয়ে দেন না। বললাম, কত আছে? বলল, আড়াই লাখ। ওরা বলল, আরেকটু বাড়ায়ে দেন। একজন বলল, বেশি করে বাড়িয়ে দেন। আরেকজন বলল, না, ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেন। সেটি হলে হয় তিন লাখ। ওখানে বসেই করলাম ৪ লাখ। বললাম, তোমাদের বেতন এখন থেকে ৪ লাখ টাকা। ওদের সঙ্গে এটাই আমাদের সম্পর্ক। কখনো ওরা বলতে পারবে আমাদের কাছে যেটা চেয়েছে, সেটা দিইনি!’
ভালো খেললেই বিসিবি সভাপতি কোটি টাকার ঘোষণা দেন। নাজমুল একটা হিসাব কষে দেখালেন বোনাসের অঙ্ক ২০ কোটি ছাড়িয়েছে, ‘২৪ কোটি টাকা ওদের বোনাস দিয়েছি। এই ১৫ খেলোয়াড়কে। শুধুই পারফরম্যান্সের জন্য। এটা কেউ দেয় নাকি? কী পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে, এই টাকার জন্য খেলা বন্ধ করে দেবে, বিশ্বাস হয় না। কোনো দিন এ নিয়ে কিছু বলল না, জানলাম না। এদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ, কাউকে বলল না। ’
সবশেষ বিশ্বকাপে ভালো খেলার পর সাকিব আল হাসান পর্যন্ত নাকি নাজমুলের কাছে বোনাস দাবি করেছেন, ‘সাকিবের সঙ্গে সবশেষ যখন দেখা, তখনো সে বলেছে, আমি বিশ্বকাপে ভালো খেললাম আমার টাকা দিয়ে দেন! বললাম, ঠিক আছে আপার সঙ্গে কথা বলে অনুষ্ঠান করে দিই। তুমি ভালো খেলেছ। ’
শুধু আর্থিক সুযোগ-সুবিধাই নয়, ক্রিকেটারদের পারিবারিক সমস্যা কীভাবে সমাধান করেন, সেটিও বিস্তারিত জানালেন নাজমুল, ‘কার ভাইকে এসপি-ডিসি মেরেছে, রাতে সেই এসপিকে ফোন দিয়ে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। এক খেলোয়াড়কে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। বলছে, মেরে ফেলবে! বিদেশ থেকে এসব থামাতে হয়। কার মামার জমি দখল করে নিয়ে গেছে উত্তরায়, সেটি উদ্ধার করতে হয়েছে। মুশফিকের বাবা, মিরাজের খালা...কোন গ্রামে কাকে মেরেছে, সেটার সমাধান আমাকে করতে হয় বিদেশ থেকে। এগুলো (দাবিদাওয়া) আমার কাছে ধাক্কা। ’
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)