টিআইবির সুপারিশ, দলীয় প্রধান হতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

টিআইবির সুপারিশ, দলীয় প্রধান হতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। আর স্বার্থের দ্বন্দ্ব এড়াতে একই ব্যক্তি একই সঙ্গে সরকারপ্রধান ও দলীয়প্রধান থাকতে পারবেন না। রাষ্ট্র কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে এ প্রস্তাব দিয়েছে দুর্নীতির বিষয়ে নজরদারি করা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

গতকাল বুধবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সংস্কারের বিষয়ে ৯টি কৌশলগত বিষয় তুলে ধরে টিআইবি।

এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য আশু করণীয় হিসেবে পাঁচটি বিষয়ও উল্লেখ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি শান্তি-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও প্রশাসনিক স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি বলে জানায়। এছাড়া দুর্নীতি ও অর্থপাচার বন্ধে দুদক, বিএফআইইউ, এনবিআর, সিআইডি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে সম্পৃক্ত করে স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করা, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ ও অর্থপাচার রোধ, সাংবিধানিক, সংবিধিবদ্ধ, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর করা, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, তথ্য অধিকার ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর করা, ব্যাংক খাত সংস্কার এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবেশ খাতের উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সুপারিশগুলো তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্র কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। তারাই ঠিক করবে সংস্কারকাজে কত সময় লাগবে। এসময় একটির পরিবর্তে আরেকটি দলীয় কর্তৃত্ববাদী সরকার জনগণ চায় না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মূল প্রত্যাশা একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার উপযোগী রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও পরিবেশ তৈরি করা। সার্বিক রাষ্ট্র পরিচালনা কাঠামোকে দলীয়করণ ও পেশাগত দেউলিয়াপনা থেকে উদ্ধার করা ছাড়া দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। জনপ্রতিনিধিত্ব, সরকার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও চর্চায় আমূল পরিবর্তন করা দরকার।

স্বার্থ সংঘাত এড়াতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত করতে সংসদ পরিচালনার জন্য স্পিকারকে সংসদের অভিভাবক হিসেবে দলীয় প্রভাবমুক্ত করতে হবে। সংসদে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করতে হবে; স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অবর্তমানে সভাপতিমণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত বিরোধীদলীয় সদস্যদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে।

এছাড়া নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ অন্তত ৫০ শতাংশ কমিটিতে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে সভাপতি নির্বাচন করতে হবে। সংসদীয় ব্যবস্থায় সংসদ সদস্য প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বয়স ও শ্রেণির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য যেমন—তরুণ প্রজন্ম, নারী, আদিবাসী ও অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ তরুণ প্রতিনিধি থাকতে হবে।

news24bd.tv/SHS