১১শ’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম, আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, সাদিক আবদুল্লাহ ও একেএম জাহাঙ্গীর

বরিশালে 

১১শ’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে বরিশাল নগরীর সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, সাবেক দুই সিটি মেয়র, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নামধারী ৩৮১ জন এবং নামধারীসহ অজ্ঞাতনামা ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী মডেল থানায় বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বাদী হয়ে এই মামলা করেন।

এসময় কোতোয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী বলেন, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ৩২।

এখন পর্যন্ত মামলার কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এই মামলার প্রধান আসামি হলেন সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম।

এছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, সদ্য সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর।

মামলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১৬ জন কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহমেদ মান্না, এনটিএমসির মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের ভাই ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ শাসুদ্দোহা আবিদ, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামজিদুল কবির বাবু, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুন্না হাওলাদার, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খান মোহাম্মদ জামাল হোসাইন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েল, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইমরান মোল্লা, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মজিবর রহমান ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়রুল মামুন শাহীন।

মামলায় আসামি হিসেবে রয়েছেন বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হেমায়েত উদ্দিন সুমন সেরনিয়াবাত, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর অপর দুই ছেলে মঈন আব্দুল্লাহ ও আশিক আব্দুল্লাহ, বরিশাল মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী গোলাম সরোয়ার রাজিব, মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ভোমরা স্থল বন্দরে বিজিবির হাতে আটকের পর মুক্ত হওয়া নিরব হোসেন টুটুল, বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মঈন তুষার, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন, সাংবাদিক বিটিভির বরিশাল প্রতিনিধি গাজী শাহ রিয়াজসহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠনের উদ্দেশ্যে বিস্ফোরণ ঘটানো ও সহায়তার অপরাধসহ বেআইনি জনতায় মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা করা, অনধিকার প্রবেশ করে চুরি, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও খুন জখমের হুমকি দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন- গত ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১২টায় নামধারীরাসহ অজ্ঞাত ৭০০ সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগ সাজসে পিস্তল, শর্টগান, ককটেল, রামদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, শাবল নিয়ে নগরের সদর রোডের টাউন হলের পাশে হামলা করে। তারা গুলি করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতিজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে টিভি, কম্পিউটার, সাউন্ড সিস্টেমসহ সাড়ে ৪ লাখ টাকার মালামাল ভাঙচুর করে।

এছাড়া অগ্নিসংযোগ করে জিয়া পাঠাগারে ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়। আশেপাশের লোকজন তা নিভাতে গেলে রীতিমতো তাদের হুমকি দেয়া হয়।

news24bd.tv/SC