কুকুরের ফার্ম দিয়েই লাখপতি সাতক্ষীরার জুয়েল

কুকুরের ফার্ম দিয়েই লাখপতি সাতক্ষীরার জুয়েল

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

গরু ছাগলের বদলে বাড়িতে কুকুরের ফার্ম করে লাখপতি জুয়েল। বর্তমানে বড় কুকুর ও কুকুরের বাচ্চা বিক্রি করে বছরে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আয় করেন এ তরুণ উদ্যোক্তা। বাড়ি সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামে, প্রকারভেদে এসব কুকুর ৭০ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। ২০১৯ সালে জুয়েল তার কাঁকড়ার খামারে গড়ে তোলেন সুন্দরবন হাস্কি নামের একটি কুকুরের ফার্ম।

 

কুকুরের ফার্ম দেখতে আসা দর্শনার্থী বলেন, জুয়েল ভাই একটা বিদেশি কুকুরের ফার্ম করেছে। এখান থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ইনকাম করে।  

কাম হেয়ার বললেই ছুটে আসছে বিশাল আকারের এক একটি বিদেশি কুকুর। এসময় মালিকের সঙ্গে সখ্যতা দেখান পোষা কুকুরেরা।

 

বরফের দেশের এসব কুকুর বেড়ে উঠছে বাংলাদেশের ফার্মে। গরম আবহাওয়ায় খাপ খাইয়ে নিতে ধাপে ধাপে চেষ্টা করেছেন বলে জানান জুয়েল।  
বলেন, 'আমি এনে প্রথমে এদেরকে এসিতে রাখছি তারপর আস্তে আস্তে নরমাল ওয়েদারে, এভাবে ম্যাচ করে গেছে। এদেরকে অভ্যস্ত করতে হবে'।

আকুয়াম্যাক্স নামের একটি কাঁকড়ার খামারের সাথে এই কুকুরের ফার্ম গড়ে তুলেছেন শহিদুল ইসলাম জুয়েল। সেখানে বিদেশি কুকুর পালন ও প্রজনন করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। তার ফার্মে রয়েছে বিশাল দেহের সাইবেরিয়ান হুাস্কি, কুচকুচে কালো ইটালিয়ান কেনি কর্সো ও ঝকঝকে সোনালি রঙের রাশিয়ান জাতের গোল্ডেন রিট্রিভার।

জুয়েলের ফার্মে ভয়ানক আক্রমণাত্মক ইটালিয়ান কেনি কর্সোর ওজন প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কেজি। এগুলোর উচ্চতা প্রায় ২৪ থেকে ২৭ ইঞ্চি।  
এক একটি সাইবেরিয়ান হুাস্কির ওজন প্রায় ২০ থেকে ৩০ কেজি। এদের উচ্চতা প্রায় ২৬ থেকে ২৮ ইঞ্চি। রাশিয়ান জাতের গোল্ডেন রিট্রিভারগুলোর ওজন প্রায় ২৫ থেকে ৩৪ কেজি ও উচ্চতা ৫৬ থেকে ৬১ সেমি.।  

জুয়েল বলেন, '২০১৪ সালে সাইভেরাসকে দেখি আমার শখ জাগে ৯৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনি। ১৬ দিনের মাথায় মারা যায়। পরের বছর স্ত্রী আমাকে একটা সাইভেরাস গিফট করে। এরপর সেখানে ১ মাস থেকে কুকুরের লালন পালন শিখি। ২০ হাজার টাকার কুকুর কিনে ৭০ হাজার টাকা প্লেন খরচ করে নিয়ে আসি বাংলাদেশে। ১ বছর কৃুকুরটার কিছু হয়না পরে ২টা ফিমেল কিনি। কুকুরগুলোর প্রজনন ঘটিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০টি বাচ্চা বিক্রি করেছেন বলে জানান জুয়েল।

জুয়েল আরও বলেন, '৫০-৬০টার মতো বাচ্চা বিক্রি করা হয়ে গেছে। ৩২টা ছিল এখন ৮-১০টার মতো আছে। এরা বছরে ২ বার বাচ্চা দেয়। ১০টা পর্যন্ত বাচ্চা দিয়ে থাকে। সর্বোচ্চ ৯টা পর্যন্ত বাচ্চা পাইছি'।  

জুয়েলের এ বিদেশি কুকুরগুলোকে কোনো বিদেশি খাবার দেয়া হয় না। দেশি খাবার খেয়েই দিব্যি বেড়ে উঠছে কুকুরগুলো। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'এরা হোম মেড ফুড খায় রাইস, চিকেন, ফিস বোনলেস। হাঁড় বা কাটা থাকলে হবে না। সাথে যে কোনো সিজনাল সবজি। কোনো মসলা দেয়া যাবে না জাস্ট বয়েল করে খেতে দিতে হবে। বাচ্চাদের ৩ থেকে ৪ বার ৬ মাস বয়স পর্যন্ত। ৬ মাসের পর হলে ১ থেকে ২ বার'।  

বাড়ি-অফিস পাহারাসহ গোয়েন্দা কাজে ব্যবহারের জন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে বিদেশি জাতের এসব কুকুরের বেশ কদর রয়েছে। উৎসুক মানুষ বিভিন্ন প্রজাতির এই কুকুরগুলো দেখতে ও কিনতে ভিড় করেন জুয়েলের ফার্মে।  

news24bd.tv/TR