স্বাক্ষর জাল করে রাস্তা খনন ওয়াসার, মালামাল জব্দ

সংগৃহীত ছবি

স্বাক্ষর জাল করে রাস্তা খনন ওয়াসার, মালামাল জব্দ

অনলাইন ডেস্ক

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল ও অনুমতি না নিয়ে লালবাগ শহীদ আবদুল আলীম খেলার মাঠ সংলগ্ন (২৬ নম্বর ওয়ার্ড) রাস্তা খনন করছিল ঢাকা ওয়াসা। এ বিষয়টি নজরে এলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে যায়। এরপর খনন কাজে নিয়োজিত লোকজনের কাছে রাস্তা খননের অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে তারা অনুমতিপত্রও দেখায়!

পরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীলকে খনন কাজের অনুমতি সম্পর্কে অবগত করা হলে তিনি অনুমতিপত্র দেখতে চান। তখনই বেরিয়ে আসে ঢাকা ওয়াসার জালিয়াতি! মিঠুন চন্দ্র দেখেন, তার স্বাক্ষর জাল করে ওয়াসা ভুয়া অনুমতিপত্র দেখিয়ে সেখানে রাস্তা খনন করছিল।

ততক্ষণে অবস্থা বেগতিক দেখে সেখান থেকে সটকে পড়ে খনন কাজে নিয়োজিত ঢাকা ওয়াসার কর্মী ও তদারকিতে থাকা লোকজন। পরবর্তীতে এই খনন কাজে ব্যবহৃত মালামাল জব্দ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকা ওয়াসার এই জালিয়াতি ধরা পরে।

জব্দকৃত মালামালের মধ্যে ২টি জেনারেটর, ১টি ড্রিল মেশিন, ২টি অ্যালুমিনিয়াম বোল, ২টি সাবল, ১টি কোদাল, ১টি এলইডি লাইট ও ৫টি হেলমেট রয়েছে।

জানা যায়, সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের আওতাধীন লালবাগ খেলার মাঠ (শহীদ আবদুল আলীম খেলার মাঠ) সংলগ্ন পানির মেইন লাইনে ইলেকট্রনিক প্রেসার রিডিউসিং ভালভ (ই-পিআরডি) স্থাপন কাজের জন্য রাস্তা খননের অনুমতি চায় ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। করপোরেশনের ওয়ান স্টপ সেল হতে এই খনন কাজের অনুমতি দেয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে গত ২১ এপ্রিল করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল স্বাক্ষরিত একটি অনুমতিপত্র ঢাকা ওয়াসার সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের (রক্ষণাবেক্ষণ) নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মোস্তাকিম হোসেন বরাবর প্রেরণ করা হয়।

অনুমতিপত্রে ২৪ এপ্রিল হতে ৩০ এপ্রিল উল্লিখিত রাস্তা খনন করতে হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাস্তা খননের কোন উদ্যোগ না নিয়ে গত ২৯ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত খনন কাজের মেয়াদবৃদ্ধির জন্য ঢাকা ওয়াসা আবেদন করে যা, ৩০ এপ্রিল করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে যায়।

পরে আসন্ন ঈদুল আজহা ও অন্যান্য বিষয়াদি অবগত করে এ সময় রাস্তা খনন করলে জনভোগান্তির কথা জানিয়ে অনুমতি দেয়া যাবে না বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এরপরেও অনুমতি ছাড়া রাস্তা খননের জন্য ঢাকা ওয়াসা হতে দুইবার উদ্যোগ নেয়া হলে অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী গত ২০ মে সংশ্লিষ্ট রাস্তা খনন করা যাবে না মর্মে চিঠি দেয়।

এমতাবস্থায় সোমবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে খবর আসে, ওয়াসা সেখানে রাস্তা খনন করছে।

এ বিষয়ে অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসা অনুমতি না নিয়ে লালবাগের শহীদ আবদুল আলীম খেলার মাঠ সংলগ্ন সড়ক খনন করছিল। এ বিষয়ে অবগত হলে আমাদের কর্মকর্তারা সেখানে যায়। আমি তখন নগর ভবনে বৈঠকে ছিলাম। এ সময় সেখানে থাকা ঢাকা ওয়াসার লোকজন আমাদের কর্মকর্তাদেরকে আমার স্বাক্ষরিত সড়ক খননের একটি অনুমতিপত্র দেখায়। এ বিষয়ে সন্দেহ হলে তারা অনুমতি পত্রটি আমাকে পাঠায়। সেটি দেখেই আমি নিশ্চিত হই যে, আমার স্বাক্ষর জাল ও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে তাদের লোকজন সেখান থেকে সরে যায়। এরপর খনন কাজে ব্যবহৃত সেসব মালামাল আমরা জব্দ করি। আর যেহেতু আমার স্বাক্ষর জাল ও তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে সেহেতু এ বিষয়ে আমরা যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রয়োজনে মামলা করা হবে। ‘

news24bd.tv/DHL

 

এই রকম আরও টপিক