যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শাহরীন রহমান নামে এক শিক্ষার্থী।
গত ৫ জুন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে যশোর কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন শাহরীন।
শুক্রবার যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন- পিইএসএস বিভাগের স্নাতক ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ইসাদ হোসেন, একই বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শাহীনুর ইসলাম, স্নাতক ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আমিনুল ইসলাম, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বেলাল হোসেন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রায়হান রহমান রাব্বি, পিইএসএস বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বিভাগের বিপুল হাসান ও একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আশিকুজ্জামান লিমন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তদের মধ্যে শাহীনুর ইসলাম, বেলাল হোসেন ও রায়হান রহমান রাব্বির নামে চাকরি প্রার্থী অপহরণের ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর একটি মামলা হয়েছিল। এছাড়া ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক হওয়ায় ইসাদ হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটি ইসাদ হোসেনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারও করেছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরীন যশোর কোতোয়ালি থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গত সোমবার (৩ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটবল খেলার সময় কথা-কাটাকাটির জেরে অভিযুক্ত শাহীনুর ইসলাম তাকে মারধর করে ও মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগ দেওয়ায় তাকে ৫ জুন শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল রানার কক্ষে (৩০৬ নং) ডেকে নিয়ে রাতভর নির্যাতন করে অভিযুক্তরা। তাকে বেধড়ক মারধর করে হল ছাড়তে বলা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে করা অভিযোগ না তুলে নিলে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে কক্ষের বাইরে রেখে দেওয়া হয়। কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে তিনি হলে তার কক্ষে ফিরে যান। এসময় ওই কক্ষের অন্যরা তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
এদিকে এ ঘটনার পর শাহরীন রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মো. আনোয়ার হোসেন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এর প্রেক্ষিতে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে জানান উপাচার্য।
