সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনপন্থী ‘কণ্ঠস্বর’ অবদমন করছে মেটা

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে মানববন্ধন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনপন্থী ‘কণ্ঠস্বর’ অবদমন করছে মেটা

অনলাইন ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যায়— এমন কনটেন্ট সরিয়ে দিয়েছে মেটা। ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের অনেক ‘বিষয়’ তারা মুছে দিয়েছে। এক রকম সেন্সরশিপ আরোপ করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এর একটি নতুন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আলজাজিরা ওই প্রতিবেদনের ওপর সংবাদ প্রচার করেছে।  

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম থেকে ফিলিস্তিনপন্থী শত শত কনটেন্ট নামিয়ে দিয়েছে মেটা। প্লাটফর্মটির নীতি লঙ্ঘন, সরকারি হস্তক্ষেপসহ নানা অভিযোগ তুলে তারা কনটেন্ট সরিয়েছে।  

এইচআরডব্লিউ-এর ভারপ্রাপ্ত সহযোগী প্রযুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ক পরিচালক ডেবোরা ব্রাউন বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের প্রতি এমনিতেই নিপীড়ন চলছে, তার ওপর আবার মেটার এই সেন্সরশিপ।

এটা ফিলিস্তিনিদের প্রতি আঘাতের সঙ্গে অপমান যুক্ত করে। একই সঙ্গে এটা ফিলিস্তিনিদের আরও দমিয়ে রাখছে। ’  

তিনি বলেন, ‘মূলত মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নেয়। কিন্তু প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর মুছে দিতে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের কনটেন্ট মুছে ফেলছে মেটা। ’

এইচআরডব্লিউ’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটা আটকে দিয়েছে ৬০টি দেশের এমন অন্তত এক হাজারটি কনটেন্ট মামলার মধ্য দিয়ে গেছে। যেটা ফিলিস্তিনের পক্ষে শান্তিপূর্ণ মতামত এবং তাদের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার ওপর অযথা হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছুই নয়।  

বেশ কয়েকটি পোস্টের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ বা মৃত্যুর খবরের পোস্টগুলো সরিয়ে নিয়েছে মেটা। তারা এ ক্ষেত্রে ‘হিংসাত্মক, গ্রাফিক্স করা বিষয়, সহিংসতার উসকানি, ঘৃণামূলক বক্তব্য, নগ্নতা, যৌন কার্যকলাপ’ ইত্যাদি অজুহাত দাঁড় করিয়েছে।  

ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতনের শতাধিক পোস্টের জন্য ‘বিপজ্জনক সংস্থা ও ব্যক্তি’ (ডিওআই) নীতি প্রয়োগ করেছে মেটা। এই নীতির লক্ষ্য হলো ‘সংগঠন বা ব্যক্তি যারা সহিংসতা করে তাদের  নিরুৎসাহিত করা। এ নীতির আওতায় ফেলে তারা হামাস সংশ্লিষ্ট কনটেন্টের ওপরও অবরোধ আরোপ করেছে।  

এইচআরডব্লিউ বলেছে, মেটা এই নীতির অপব্যবহার করেছে। মূলত ফিলিস্তিনি সশস্ত্রগোষ্ঠীকে দমাতে তারা এটা করেছে।  

এছাড়া ফিলিস্তিনপন্থী পোস্ট করায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের অনেকের অ্যাকাউন্ট মুছে দিয়েছে মেটা। কারও কারওটি সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। অনেকের পোস্টের রিচ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

এইচআরডব্লিউ আরও জানিয়েছে, আপিল সিস্টেমে ত্রুটির কারণে সেন্সর করা পোস্টের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আপিল করা যায়নি, যার ফলে ব্যবহারকারীদের প্রতিকারের সুযোগ নেই।  

এভাবে নানা অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে যায়— সোশ্যাল মিডিয়ার এমন পোস্টগুলোতে অবরোধ আরোপ করেছে মেটা। যদিও মিয়ানমার ও ইথিওপিয়ার ঘটনায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে অনেক বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে মেটার বিরুদ্ধে।   

news24bd.tv/আইএএম