দলবদ্ধ ধর্ষণে কিশোরী গর্ভবতী, এলাকার মাতব্বর গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

দলবদ্ধ ধর্ষণে কিশোরী গর্ভবতী, এলাকার মাতব্বর গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দলবদ্ধ ধর্ষণে গর্ভবতী কিশোরী ও তার পরিবারকে গ্রামছাড়া করার অভিযোগে মাতব্বর হারুন শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ মে) পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।

এর আগে সোমবার (৬ মে) রাতে থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। ওই কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রতিবেশী জুনায়েত শেখের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর সূত্র ধরে জুনায়েত শেখ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।

২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর ওই কিশোরীর বাবা-মা বাড়ি না থাকার সুবাদে ওই রাতে কিশোরীকে ডেকে নিয়ে পরমেশ্বরদী গ্রামের মনমত মণ্ডলের মেহেগনি বাগানের ভিতরে প্রেমিক জুনায়েত শেখ (১৬), তার বন্ধু জুবায়ের ফকির (১৫) ও তরিকুল ফকির (১৬) মিলে ধর্ষণ করে।

সম্প্রতি ওই কিশোরীর শারিরীক পরিবর্তন দেখা দেয়।

চলতি বছরে গত ২৯ এপ্রিল কিশোরীর মা শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে কিশোরী গর্ভবতী হওয়ার পুরো বিষয়টি তার বাবা-মাকে খুলে বলে। ঘটনা শুনে কিশোরীর বাবা গ্রামের মাতব্বর হারুন শেখের কাছে বিচার চেয়ে নালিশ দেন। হারুন শেখ (৪৮) কোন বিচারের ব্যবস্থা না করে উল্টো মারধর করে ভুক্তভোগীর পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করে।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে রোববার (৫ মে) রাতে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই গ্রামের তিনজনকে আটক করে।

সোমবার (৬ মে) বিকেলে ওই কিশোরী ও তার বাবা-মাকে খবর দিলে থানায় এসে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে পরমেশ্বরদী গ্রামের মোতালেব শেখের ছেলে জুনায়েত শেখ (১৬), বিল্লাল ফকিরের ছেলে জুবায়ের ফকির (১৫), আলফাডাঙ্গা উপজেলার ভেন্নাতলা গ্রামের তৈয়েবের ছেলে তরিকুল ফকির (১৬) ও পরমেশ্বদী গ্রামের সেকেন শেখের ছেলে হারুন শেখকে (৪৮) আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর ১৪। মামলার পর ৪ নম্বর আসামি হারুন শেখকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের পরে কিশোরীর পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করা হয়। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে এবং বিষয়টি এলাকায় গুঞ্জনের ভিত্তিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে এলাকার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। তার মধ্যে হারুন শেখের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় এবং তার তথ্য অনুযায়ী কিশোরী ও তার মাকে পাশের আলফাডাঙ্গা থানার টিটা থেকে এবং বাবাকে ফরিদপুর সদর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

তিনি আরও জানান, এরপর বিচারের জন্য মামলার ব্যবস্থা নেয়া হয়। মঙ্গলবার কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মামলার ৪ নম্বর আসামি হারুন শেখকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

news24bd.tv/কেআই