বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আভাস

বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আভাস

বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আভাস

অনলাইন ডেস্ক

ভারতজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। কাঠফাটা রোদে সর্বত্র চলছে বৃষ্টির জন্য হাহাকার। এমন মুহূর্তে স্বস্তির খবর জানাল দেশটির কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি)। এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

 

সোমবার (১৫ এপ্রিল) আইএমডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে ভারতজুড়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ছয় শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর ভারতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হতে পারে ৮৭ শতাংশ।

আরও জানানো হয়েছে, এ বছর বর্ষার আগে ‘এল নিনো’ পরিস্থিতির প্রভাব তেমন না-ও থাকতে পারে। ‘লা নিনা’-ও দুর্বল থাকতে পারে।

সচরাচর এমন পরিস্থিতি থাকলে, বৃষ্টিপাতের সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়।  

১৯৭১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কয়েক বছরের বর্ষার রেখচিত্র পর্যবেক্ষণ করে আইএমডি জানিয়েছে, ‘লা নিনা’ সক্রিয় ছিল এমন ২২টি বছরের মধ্যে ২০টিতে স্বাভাবিক বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। ব্যতিক্রম ছিল কেবল ১৯৭৪ এবং ২০০০ সাল।

সচরাচর ১ জুন কেরালা হয়ে ভারতে ঢোকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। এ বায়ুর প্রভাবে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি চলে। সেটিই এ দেশের ঘোষিত বর্ষা-ক্যালেন্ডার। তবে এই দিনক্ষণের হেরফের হয় প্রায়ই।  

আইএমডি জানিয়েছে, বসন্তকালে এ বার উত্তর মেরুতে অন্য বারের তুলনায় কম তুষারপাত হয়েছে। এর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। সব মিলিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস, এবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি পাবে ভারত।

কিছুদিন আগে গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিস। এ বছর গোটা গরমকাল জুড়েই ভারতে লোকসভা নির্বাচন চলবে। তাই আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঘোষণায় অনেকেই আশঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে, তাদের নতুন ঘোষণা অনেককেই স্বস্তিতে রাখল। চাষবাস নিয়েও আশ্বস্ত হওয়ার মতো রসদ পেলেন কৃষকেরা।

প্রসঙ্গত চিলি, পেরু-সহ দক্ষিণ আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলবর্তী দেশগুলিতে ‘এল নিনো’ (স্প্যানিশে যার অর্থ ছোট্ট ছেলে) ঘটে। দুই থেকে সাত বছর অন্তর ফেরে এই পরিস্থিতি। এর ফলে মহাসাগরের জলস্তরের (সি সারফেস) তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পায়। এর ফলে উপকূল এলাকার বায়ুমণ্ডলও তেতে ওঠে। এই পরিস্থিতির জেরে প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম প্রান্ত থেকে গরম জলের স্রোত মহাসাগরের পূর্ব দিকে ধেয়ে যায়। এর ফলে পূর্ব উপকূলের সেই গরম পানি তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয় মহাসাগর সংলগ্ন স্থলভাগের বিভিন্ন দেশের বহু এলাকার।  

ওই সময় সমুদ্রের তলদেশ থেকে ঠান্ডা পানিও উপরে উঠে আসতে পারে না। ফলে সেখানকার সমুদ্রের পিঠের জলস্তর ঠান্ডা হওয়ার সুযোগই পায় না। আর ‘লা নিনা’-তে ঠিক এর উল্টো পরিস্থিতি হয়। ‘এল নিনো’ সক্রিয় হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ে আর তা দুর্বল হলে বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় বাড়তে থাকে শীতলতা। তাকেই বলে ‘লা নিনা’ (স্প্যানিশে যার অর্থ ছোট্ট মেয়ে)।

news24bd.tv/aa