ভারি বর্ষণে কক্সবাজারে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে ২৫ হাজার পর্যটক

সংগৃহীত ছবি

ভারি বর্ষণে কক্সবাজারে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে ২৫ হাজার পর্যটক

কক্সবাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়াতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় ২৫ হাজার পর্যটক। গত বুধবার থেকে অবিরাম ভারি বর্ষণে এক প্রকার তলিয়ে গেছে কক্সবাজার শহর। জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেক পর্যটক হোটেল কক্ষে আটকা পড়েছেন।

এ ছাড়া বৃষ্টিতে কক্সবাজারের ৯টি উপজেলার অন্তত ২০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় পানি-বন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

উল্লেখ্য, গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। পর্যটন শহরটিতে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেছে রাস্তা-অলিগলি।

এছাড়া শহরটির প্রধান সড়ক ও সাগর পারের কলাতলী এলাকা সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। এমন অবস্থায় শহরের বাসিন্দারা যেমন বাসা-বাড়ির বাইরে যাতায়াত করতে পারছে না, তেমনি পর্যটকরাও মারাত্মক ভোগান্তির মুখে পড়েছেন।
কক্সবাজারে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

চলতি মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এর আগে ২০১৫ সালের ২৪ জুন এক দিনে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।

ভারি বর্ষণে কক্সবাজার শহরের কমপক্ষে ২০টি সড়ক ও উপসড়কসহ গলি হাঁটু এবং কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। বর্ষণের পানিতে দফায় দফায় কোমর পানিতে ডুবে গেছে সাগরপারের কলাতলী সড়কটি। এ সড়কের পাশের বেশিরভাগ আবাসিক হোটেলে ওঠেন পর্যটকরা।

সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হোটেল কক্ষেই আটকা পড়ে আছেন অনেক ভ্রমণ পিপাসু মানুষ।

সাগরপারের হোটেল, মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন জানান, হোটেলটির ২৫টি কক্ষে ৫০-৬০ জন পর্যটক রয়েছেন। টানা বর্ষণের কারণে হোটেলের সামনের রাস্তাটি জলাবদ্ধ থাকায় অনেক পর্যটক কক্ষেই সময় কাটাতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, সাগরপারের হোটেল-মোটেল জোনে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় একটুখানি বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: ঘুর্ণিঝড়ের শঙ্কা নেই, অব্যাহত থাকবে বৃষ্টিপাত

রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা কাজী শাহাবুদ্দিন নামের একজন পর্যটক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একদম অপরিকল্পিত একটি পর্যটন শহর। একটুখানি বৃষ্টি হলেই হোটেল থেকে বের হওয়া যায় না। এখানে পানি নিষ্কাশনেরও তেমন ব্যবস্থা নেই। ’
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, ‘সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটির প্রথম দিন শুক্রবার হওয়ায় অনেক পর্যটক এসেছেন। তাদের অনেকেই আবার ফিরেও গেছেন। এখনো কমপক্ষে ২৫হাজার পর্যটক অবস্থান করছেন কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে। ’ 

তিনি জানান, এসব পর্যটকের বেশির ভাগই হোটেল কক্ষে সময় পার করছেন। এই জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হচ্ছে পরিকল্পনাহীন উন্নয়ন। এখানে সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

news24bd.tv/JP