দেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশ ও সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজারসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় সারাদিন ভারি বর্ষণ হয়েছে। তবে নিম্নচাপটি স্থলের খুব কাছাকাছি থাকায় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার তেমন শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এর প্রভাবে মূলত আগামীকাল শনিবার ও পরবর্তী দিন রবিবার সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগে পাহাড়ধসের সতর্কতা বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর (চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা) এবং উপকূলীয় এলাকা কক্সবাজারে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেতও বহাল রাখা হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাব ও বৃষ্টিপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম শুক্রবার রাতে জানান, ‘নিম্নচাপটি স্থলের খুব কাছাকাছি থাকায় এটি আরো ঘনীভূত হওয়া বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। সিস্টেমটি শুক্রবার উপকূলের কাছাকাছি থাকায় এসব অঞ্চলে বৃষ্টি ছিল।
এদিকে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে ও উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা থাকায় আগামী শনি ও রবিবার চট্টগ্রাম বিভাগের নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। এতে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি জেলা এবং পূর্বাঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
অন্যদিকে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় বরিশাল ও খুলনা বিভাগের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে।
কক্সবাজারে রেকর্ড ৪৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দুই বিভাগ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে বৃষ্টি তুলনামূলক অনেকটাই বেশি ছিল শুক্রবার। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজারে, ৪৩৬ মিলিমিটার। গত ৯ বছরের মধ্যে এটিই কক্সবাজারে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৫ সালের ২৪ জুন কক্সবাজারে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হওয়া ৪৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিই এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ। তবে যদি আমরা ৩০ ঘণ্টা হিসাব করি অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ৫৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। ’
news24bd.tv/JP