ইংল্যান্ডকে তাদেরই কৌশলেই পরাস্ত করলো শ্রীলঙ্কা। বাজবলের আদলে ব্যাট করে দুই ইনিংসেই লঙ্কানদের নির্ভরতা দেন পাথুম নিসাঙ্কা। তাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দল। একইসঙ্গে সাদা পোশাকে ১০ বছর পর ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেল সাঙ্গাকারা-মুরালিদের উত্তরসূরিরা।
ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। নিসাঙ্কার মারকুটে সেঞ্চুরিতে ২ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করে নেয় সফরকারীরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৪ বলে ১২৭ রানের অপরাজিত ইনিংসের আগে প্রথম ইনিংসে ৫১ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলা নিসাঙ্কা ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন।
প্রথম টেস্টে ৫ উইকেটের ব্যবধানে আর দ্বিতীয় টেস্টে ১৯০ রানের বড় ব্যবধানে হার।
ওভালে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করেছিল ৩২৫ রান। ওলি পোপ ১৫৪ ও বেন ডাকেট ৮৬ রান করেন। ৩টি উইকেট নেন শ্রীলঙ্কার মিলান রত্নায়কে। জবাব দিতে নেমে শ্রীলঙ্কা তাদের প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয় ২৬৩ রানে। নিসাঙ্কা ৬৪, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ৬৯ ও কামিন্দু মেন্ডিস ৬৪ রান করেন। ৩টি করে উইকেট নেন ইংল্যান্ডের জোশ হাল ও ওলি স্টোন। প্রথম ইনিংস শেষে ৬২ রানের লিড পায় ইংল্যান্ড।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড অল-আউট হয় মাত্র ১৫৬ রানে। জেমি স্মিথ দলের হয়ে সব থেকে বেশি ৬৭ রান করেন। এছাড়া ৩৫ রান করেন ড্যান লরেন্স। শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪টি উইকেট নেন লাহিরু কুমারা। ৩টি উইকেট নেন বিশ্ব ফার্নান্ডো।
শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১৯ রানের। তৃতীয় দিনের শেষে শ্রীলঙ্কা তাদের শেষ ইনিংসে তোলে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৯৪ রান। সুতরাং, ম্যাচের শেষ ২ দিনে জয়ের জন্য তাদের দরকার ছিল মোটে ১২৫ রান। হাতে ছিল ৯টি উইকেট। ৪৪ বলে ৫৩ রান করে তৃতীয় দিনে নট-আউট ছিলেন নিসাঙ্কা।
শ্রীলঙ্কা চতুর্থ দিনে তার পর থেকে খেলতে নেমে অনায়াসে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। প্রথম ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরির পরে দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত শতকে দলের জয় নিশ্চিত করেন নিসাঙ্কা। ইংল্যান্ডের বাজবল কৌশল রপ্ত করে ওয়ানডে স্ট্রাইলে ব্যাট করে ওভার প্রতি ৫.৪০ রান সংগ্রহ করে জয় তুলে নেয় তারা।
নিসাঙ্কার ১২৪ বলে ১২৭ রানের ইনিংসটি ১৩টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ছিল। ৩৭ বলে ৩৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন কুশল মেন্ডিস। তিনি ৭টি চার মারেন। ৬১ বলে ৩২ রান করে নট-আউট থাকেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তিনি ৩টি চার মারেন। শেষ ইনিংসে ইংল্যান্ডের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও গাস অ্যাটকিনসন।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে সবশেষ ২০১৪ সালের জুনে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। হেডিংলির ওই টেস্টে ১০০ রানের বড় জয় পেয়েছিল সফরকারীরা।
এরপর গত ১০ বছরে হোম ও অ্যাওয়ে মিলিয়ে ১০ টেস্ট খেলেও আর ইংলিশদের হারাতে পারেনি লঙ্কানরা। ৯ হারের বিপরীতে শুধু ২০১৬ সালের লর্ডস টেস্টে ড্র করতে পেরেছিল তারা। অবশেষে কেনিংটন ওভালে সে ডেডলক ভাঙল ধনাঞ্জয়ার নেতৃত্বাধীন দল।
news24bd.tv/কেআই