দ্বিতীয় স্বাধীনতা প্রাপ্তির ডায়েরি

জান্নাতি কবিতা

মতামত

দ্বিতীয় স্বাধীনতা প্রাপ্তির ডায়েরি

জান্নাতি কবিতা

জুলাইয়ের আগে থেকেই যেন একটা আভাস পাচ্ছিলাম বেনজির, মতিউর, আবেদ আলী একের পর এক ইস্যু নিয়ে হট্টগোল চলছে। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কিছু একটা জানান দিচ্ছিল। পারিবারিক আড্ডায় সেকথা বলেওছিলাম।

এভাবেই জুলাই চলে এলো।

শুরুর দিকে সবকিছু মোটামুটি স্বাভাবিক। ৩ তারিখ থেকে স্কুলগুলোতে ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু হলো। প্রথমবারের মতো ষান্মাসিকের প্রশ্নপত্র তৈরি করছে এনসিটিবি। সে প্রশ্ন একেবারে আকাশ থেকে পড়ার মতো।
অবশ্য প্রশ্ন আকাশ থেকে পড়ছে না, পড়ছে ইউটিউব থেকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সময়টায় কিছুটা বিরক্ত এবং হতাশ। কারণ নতুন কারিকুলাম যুগোপযোগী হলেও প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো সমন্বয় নেই। মেয়েকে পড়াই আমি নিজেই। তাই এসব নিয়ে টুকটাক লিখছি। এদিকে ২০১৮ সালের সরকারি পরিপত্রকে বেআইনি ঘোষণার মাধ্যমে হাইকোর্ট কর্তৃক সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। অবসর পেলেই টিভি আর সোস্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখি। বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানববন্ধন চলছে। আন্দোলন তখনও মোটামুটি টিএসসি আর শাহবাগ কেন্দ্রীক। দেশের প্রায় সব মানুষ কোটা সংস্কারের পক্ষে। তবে সরকার খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছিল বলে মনে হয়নি। মন্ত্রীদের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, তারা বেশ আত্মবিশ্বাসী। যদিও দেশের মানুষ স্বস্তিতে নেই।

চারদিকে অজানা অস্বস্তি আর উত্তেজনা। ১০ তারিখ পুলিশের ব্যারিকেড সত্বেও শিক্ষার্থীরা শাহবাগ অবরোধ করলো। দুপুরে জানা গেলো, কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়েছে। আন্দোলন ক্রমশ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছিল। দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ। ঢাকার ভেতরে একদিকে জনজীবন স্তিমিত অন্যদিকে টানটান উত্তেজনা। ১১ তারিখেও ঢাকা চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, মিছিল চলছে। চলছে পুলিশের এ্যাকশন। অবস্থার উন্নতি নেই। ১২ জুলাই কুমিল্লা, রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধের খবর পেলাম। প্রশাসনের সতর্কবাণী উপেক্ষা করে একের পর এক কর্মসূচি আসছে। অনেকে আহত। চায়ের দোকানে, বাজারে, রাস্তায় একই আলোচনা। রিকশায় উঠলে রিকশাওয়ালাও গল্প জুড়ে দেয়। কখনো আন্দোলন, কখনো বা এরকম পরিস্থিতিতে উপার্জন কমে যাওয়ায় হতাশার কথা বলে। ১৪ জুলাই গণ পদযাত্রার কর্মসূচি। তারপর হঠাৎ মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে।

১৫ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল, সূর্যসেন হলসহ ক্যাম্পাসের বেশকিছু জায়গায় আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের খবর দেখলাম। সোস্যাল মিডিয়া সরগরম। আলোচনা, সমালোচনা, গুজব, খবর....। একবার স্ক্রিনে চোখ পাতলে, সরানো মুশকিল।

তারপর ১৬ জুলাই। পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু! আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লো। এরমধ্যে মেয়ের চারটে পরীক্ষা হয়ে গেছে। যদিও পড়াশোনা প্রায় বন্ধ। ১৬ তারিখ রাতেই ঘোষণা এলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের। তারমানে উন্নতির আশা নেই! পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে? রাস্তা ঘেঁষা বাসায় থাকি।

১৭ জুলাই রাত নটার দিকে দেখলাম রাস্তায় ব্যারিকেড দিচ্ছে কয়েকজন। রোডলাইট বন্ধ। কেমন ভুতুড়ে পরিবেশ। করোনাকালের কথা মনে পড়ে গেল। তখন অবশ্য যখন তখন পুলিশ বা সেনাবাহিনীর গাড়ি যেতো হুইসেল বাজিয়ে। ১৮ জুলাই মিরপুর ১৩-তে বোনের বাসায় গেছি একটা কাজে। অস্বস্তি ছিল। ১০ নাম্বার এড়িয়ে ভেতর দিয়ে গেলাম। বিআরটিএ'র পিছনেই ওদের এ্যাপার্টমেন্ট। দুপুর তিনটের দিকে হঠাৎ পরপর গুলির শব্দ।

বারান্দায় বেরিয়ে দেখি মূল সড়কে একসারি পুলিশ ফায়ার করতে করতে এগোচ্ছে। গলিতে গলিতে মানুষ। বাড়ির ছাদে মানুষ। পুলিশ ফিরে যেতেই সবাই পথে নেমে এলো। তারপর নির্বিঘ্নে বিআরটিএ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। ২ মিনিট পথের দূরত্বে কাফরুল থানা, অন্যদিকে ১০ নাম্বার ফায়ার সার্ভিসের অফিস থেকেও মিনিট দুয়েকের পথ'ই হবে। কিন্তু কেউ এলো না। না পুলিশ, না দমকলবাহিনী! দেখতে দেখতই বোনের ছেলে চিৎকার করে উঠলো, খালা মণি, মেট্রোরেলে আগুন! দেখলাম ধোঁয়ার কুন্ডলি উঠছে। আকাশে হেলিকপ্টার, সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ, মানুষের হইচই সব মিলিয়ে নরকগুলজার। ঘন্টাখানিক পর বিআরটিএ'র সামনে কয়েকজন পুলিশ এলো। যারা আগুন দিয়েছিল, তারা চলে এলো পিছন দিকে। পুলিশকে ভুয়া ভুয়া বলে শ্লোগান দিচ্ছিল। পুলিশ টিয়ার শেল ছুঁড়লো। আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখেমুখে জ্বলুনি নিয়ে সবাই একসাথে বেসিনে হুমড়ি খেয়ে পড়লাম!

ফেরার সময় প্রচন্ড আতঙ্ক নিয়ে ফিরেছি। মূল রাস্তা সুনসান। ইটের টুকরো, ভাঙা কাঁচ, গাছের ডাল পাতায় পরিত্যক্ত রণক্ষেত্র। এই পথে আমার নিত্য আসা যাওয়া; অথচ কী ভয়ঙ্কর আর অচেনা মনে হয়ছিল সেদিন! তারপর তো খুব দ্রুত ঘটলো সবকিছু। আমার মনে হচ্ছিল, জুলাই খুব জোরে দৌড়াচ্ছে কিন্তু শেষ রেখাটা ছুঁতে পারছে না। কারফিউ জারি হলো, ইন্টারনেট বন্ধ হলো। এইসময় আমরা একবেলাও ডাইনিং টেবিলে বসিনি। খাবারের থালা হাতে সবাই টিভির সামনে। একবার অন্যঘরে গেলেই মেয়ে অথবা তার বাবা দৌড়ে এসে জানাচ্ছিল, এই খবর, সেই খবর।

প্রতি রাতে ঘুমাতে যেতাম সকালে একটা ভালো খবর শোনার আশা নিয়ে। কিন্তু শুধুই দুঃসংবাদ! ধ্বংস, মৃত্যু! এক একটা মৃত্যুর খবরে আত্মা জ্বলে যাচ্ছিল! এক একটা ধ্বংসের ছবি বুকে বিঁধে যাচ্ছিল!

 অবশেষে ৫ আগষ্ট। সেনাপ্রধানের ভাষণের অপেক্ষা। তখনও দুপুরের রান্না শেষ হয়নি। মেয়ের বাবাকে রান্নার খেয়াল রাখতে বলে, আমি তাড়াতাড়ি করে গোসল করতে ঢুকলাম। আড়াইটায় ভাষণ দেবার কথা। হুড়োহুড়ি করে গোসল সেরে এসে দেখি সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সময় যায়, উৎকণ্ঠা বাড়ে। শেষমেশ ভাষণ শুনলাম। তারপর'ই পর্দায় ভেসে উঠলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে যাবার খবর। এটা কল্পনাতীত ছিল। কিছুক্ষণের হতভম্ব ভাব কাটিয়ে উঠলাম, রাস্তায় অজস্র মানুষের বিজয়োল্লাস দেখে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছি, সেনাবাহিনীর গাড়িতে উল্লাস করতে করতে ছুটছে জনতা, মোটর সাইকেলের বহর, ট্রাকে শিক্ষার্থীদের ঢল। স্বাধীন, স্বাধীন চিৎকার। নিচে নেমে এলাম। এ প্রজন্ম একাত্তর দেখেনি। শুনেছে। তাই হয়তো একাত্তরের আদলেই বিজয়োৎসব চলছিল।

কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই বিজয়োৎসব ম্লান হয়ে উঠেছিল গণভবন, সংসদ ভবনে লুটপাট, ৩২ নম্বরে আগুন আর উশৃংখলতা দেখে। পরবর্তী কয়েক রাত কাটলো জেগে, ডাকাত পাহারা দিয়ে। সন্ধ্যা নামতেই মসজিদের মাইকে ভেসে আসে সজাগ থাকার আহবান। মাঝরাতে ডাকাতের আনাগোনা, হইচই। দেশে সরকার নেই, পুলিশ নেই। সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ রূপ দেখতে খুব ভালো লাগতো এইসময়। গভীর রাতে আশংকায় চমকে উঠে জানালায় চোখ পেতে দেখেছি অতন্দ্র প্রহরী তরুণদের। ৮ আগষ্ট ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তবর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করলো। সুযোগ আর গুজবে এ্যাকচুয়াল আর ভার্চুয়াল দুনিয়া সয়লাব! সবাই গগনচুম্বী আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। চারদিকে নতুন দৃশ্য। শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক সামলাচ্ছে, রাস্তা পরিষ্কার করছে, গ্রাফিতি আঁকছে। চারদিকে উৎসব উৎসব ভাব। এসব দেখতে ভালো লাগে। সাথে প্রশ্নও জাগে, নগরীর পুরোনো দেয়ালগুলো রঙিন হয়ে উঠলেও ভেতরের  জীর্ণতা মুছে ফেলা যাবে কি? সবাই নতুন সরকারকে ভাবছে যাদুর চেরাগ। সবকিছু এক লহমায় পাল্টে দেবে। দ্রব্যমূল্য কমবে,বাকস্বাধীনতা থাকবে, কেউ বঞ্চিত হবে না, ঘুষ চাঁদাবাজি থাকবে না, দেশের অর্থ বিদেশে পাচার হবে না। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, বাঙালির চির স্বপ্নের বাংলাদেশ। কিন্তু স্বপ্ন যেন অধরাই থেকে যাচ্ছে। আমরা একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের একমাস পেরিয়ে এলাম। দ্রব্যমূল্য কমেনি, সমালোচনা করলেই আগে তো বলোনি, এখন বলছো কেন? অর্থাৎ আগের'ই মতো। বিরোধী'র কণ্ঠ চেপে ধরা অব্যাহত আছে। আচ্ছা থাক। এসব গুছিয়ে উঠতে সময় লাগবে ধরে নিলাম।

আশু সমাধান দরকার আইনশৃঙ্খলা আর শিক্ষাক্ষেত্রে। ট্রাফিক পুলিশ কাজে ফিরেছে, কিন্তু থানাগুলো এখনও পুরোপুরি সচল নয়। বেশকিছু সাম্প্রদায়িক হামলার খবর এসেছে । আবার অনেক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় মুসলিমরা মন্দির পাহারা দিয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। থানাগুলোতে সেনাবাহিনী পাহারা দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য এখনও "আল্লাহ ভরসা"।

 এসবের মাঝে শুরু হলো বন্যা। শিক্ষার্থীরা ত্রাণ সংগ্রহ করছে। দেশের মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে অভূতপূর্ব উদাহরণ তৈরি করলো। প্রধান উপদেষ্টা ১০০কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে বন্যার্তদের পাশে। নতুন সরকারের কাছে মানুষ অনেক আশা, অনেক দাবি নিয়ে ছুটছে। তারমধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলো, আনসারদের দাবিদাওয়া নিয়ে। এই দরিদ্র শ্রেণির মানুষগুলো হয়তো ভেবেছিল, ছাত্রদের মতো এক'ই কায়দায় (এইচএসসি পরীক্ষায় অটো পাশের দাবি) তারা দাবি আদায় করে নেবে। তাদের প্রতি আর একটু সহানুভূতিশীল হওয়া যেত হয়তো। শিক্ষা ক্ষেত্রে চলছে চরম অরাজকতা। এটার এখনই লাগাম টেনে ধরা দরকার।

 নয়ত মব জাস্টিসকে উৎসাহিত করা হবে; যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রসমাজ, যুবসমাজ এগিয়ে আসবে। কিন্তু তাদের আসল জায়গা ক্লাসরুম। জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ফেরানো এখন সময়ের দাবি। নয়তো, সেশন জটসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হবে। সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ, রাষ্ট্র সংস্কারের। শ্রেণি, পেশা, ধর্মভেদে মানুষের অনেক চাওয়া। যদিও সরকারের বয়স এক মাস।

সবশেষে কয়েকদিন আগে পড়া একটা গল্প দিয়ে শেষ করতে চাই। সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি সমস্ত আচার অনুষ্ঠান শেষ করে সবে মাত্র বাসর ঘরে ঢুকেছে। এমন সময় বাড়িতে হট্টগোল। বর তড়িঘড়ি বাইরে এসে দেখে, তার চাচা চিৎকার করে বলছে, বিয়েতে ব্যবহারের জন্য তার বাড়ি থেকে যে বালতি আনা হয়েছিল সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। যদি পাওয়া না যায়, নতুন বালতি কিনে দেওয়া হবে, এই মর্মে আশ্বাস দিয়ে বর বাসর ঘরে ফিরলো। ৫ মিনিট না যেতেই হট্টগোল। বর বেরিয়ে এলো আবার। এবার অভিযোগকারী তার বড় বোনের স্বামী।

অভিযোগ, বাড়ির জামাই হওয়া সত্বেও তাকে যথাযোগ্য সম্মান করা হয়নি। তাই তিনি এখন'ই শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করবেন। বড় বোন ভাইয়ের হাত ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলছে, তোর দুলাভাইকে ফেরা। ক্ষমা চেয়ে অনেক কষ্টে ভগ্নিপতিকে ম্যানেজ করে বর আবার বাসরে ঢুকলো।

 কিছুক্ষণের মধ্যেই দরজায় ধাক্কা। এবার বরের মামা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। সবাই মিলে মামার মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করে তুলতে তুলতে ভোরের আলো ফুটে উঠলো।

সকালে নাস্তা করার সময়, ছোট ননদ বউকে বললো, ভাবি, আব্বা-আম্মা কিন্তু একমাত্র ছেলের নাতি-নাতনীর মুখ দেখার অপেক্ষায় আছে। আমি ফুপি হবো কবে?
আমরাও অধীর অপেক্ষায় আছি; রাষ্ট্র সংস্কারের ইতিবাচক রূপ দেখার জন্য। তবে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে একটু সময় দিতেই হবে।

news24bd.tv/ডিডি
 

সম্পর্কিত খবর