আজওয়া খেজুর প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) যা বলেছেন

আজওয়া খেজুর প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) যা বলেছেন

 মাইমুনা আক্তার

শুকনা খাবারের মধ্যে সবচেয়ে উপকারী একটি ফল খেজুর, যা অল্প কয়েকটি খেলেই শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হয়। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে খেজুর হলো সুপার ফুড। পুষ্টিবিদদের মতে, খেজুরে আছে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক ও ম্যাঙ্গানিজসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। তাই স্বাস্থ্য সচেতন লোকেরা তাঁদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় খেজুর রাখতে ভালোবাসেন।

পৃথিবীতে প্রায় তিন হাজার প্রজাতির খেজুর আছে। তার মধ্যে উত্কৃষ্ট খেজুর হিসেবে মদিনার আজওয়াকে বিবেচনা করা হয়। কেননা নবীজি (সা.) এই খেজুরকে জান্নাতের ফল আখ্যা দিয়েছেন। পবিত্র হাদিস শরিফে এই ফলটিকে জান্নাতের ফল আখ্যায়িত করা হয়েছে।

রাসুল (সা.)-এর প্রিয় ফল ছিল খেজুর। এর উপকারিতা অপরিসীম। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া (উত্কৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫৪৪৫)

বিশেষজ্ঞদের মতে, খেজুরে থাকা প্রচুর পটাসিয়াম হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং এলডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। খেজুর খেলে ধমনি পরিষ্কার থাকে। রক্ত চলাচলে কোনো বাধার সৃষ্টি হয় না। ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

রাসুল (সা.) তাঁর এক সাহাবিকে হৃদরোগের জন্য আজওয়া খেজুরের তৈরি ওষুধ খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি অসুস্থ হলে রাসুল (সা.) আমাকে দেখতে আসেন।

এ সময় তিনি তাঁর হাত আমার বুকের ওপর রাখলে আমি তাঁর শৈত্য আমার হৃদয়ে অনুভব করি। এরপর তিনি বলেন, তুমি হৃদরোগে আক্রান্ত। কাজেই তুমি সাকিফ গোত্রের অধিবাসী হারিসা ইবনে কালদার কাছে যাও। কেননা সে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। আর সে যেন মদিনার আজওয়া খেজুরের সাতটা খেজুর নিয়ে বিচিসহ চূর্ণ করে তোমার জন্য তা দিয়ে সাতটি বড়ি তৈরি করে দেয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৩৫)

এই হাদিস দ্বারা আরেকটি জিনিস স্পষ্ট হয় যে খেজুর থেকে কাঙ্ক্ষিত উপকার পেতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। খাবারের মাত্রা ও পদ্ধতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঠিক করে দেবেন।