চট্টগ্রামে সরকারি জায়গা-জমি দখলকে যেন উৎসবে পরিণত করেছিলেন সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা। গত ১৫ বছরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বন বিভাগের কমপক্ষে ২১২ একর জায়গা দখল করেন তারা। আর বন বিভাগের এসব জায়গায় গড়ে তোলা হয় রেস্টুরেন্ট, মাছের খামার, রিসোর্ট এবং বাংলো বাড়ি।
তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বন বিভাগের এ জায়গা উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়া কুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, হাছান মাহমুদ ও তার ভাইয়েরা বন বিভাগের ২১২ একর ভূমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে নেয়। অবৈধভাবে দখলে নেওয়া জায়গায় গড়ে তোলেন রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, বাংলো বাড়ি, মাছ ও গরুর খামার। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক তারা এসব স্থাপনা গড়ে তোলে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার ছোট ভাই এরশাদ মাহমুদ বন বিভাগের কমপক্ষে ২১২ একর জায়গা অবৈধভাবে নিজেদের দখলে নেয়। যার মধ্যে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের দশমাইল এলাকার ৫ একর ভূমিতে গড়ে তোলেন মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও রেস্টুরেন্ট। পাহাড়ি এলাকা আটকে তৈরি করেন তিনটি পুকুর। সুখবিলাস এলাকার ১৫ একর ভূমিতে খনন করেন দুটি বিশাল পুকুর। যাতে মাছের চাষ করা হয়।
একই এলাকার ৫০ একর ভূমিতে তৈরি করেন গরুর খামার। দুধপুকুরিয়া বন বিটের ৩০ একর এলাকা দখল করে তৈরি করেন বিভিন্ন ধরনের ফলের বাগান। বনের জায়গা দখল করে নির্মাণ করেন বিশাল বাংলো বাড়ি। এছাড়া আরও ৮টি স্পটে শতাধিক একর জায়গা দখল করে তৈরি করেছেন মৎস্য ও গরুর খামার। তৈরি করেন ফলবাগান।
হাছান মাহমুদ পরিবারের দখলে থাকা সব ভূমিই এখন ধীরে ধীরে উদ্ধার করছে বন বিভাগ। এখন পর্যন্ত ১০৫ একর ভূমি দখলমুক্ত হলেও বাকি রয়েছে আরও ১০৭ একর। যদিও দখলে থাকা জমির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
শুধু বন বিভাগের জমি নয়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলাজুড়ে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণও ছিল তাদের হাতে। কর্ণফুলী নদী, শিলক খাল, ইছামতী খালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হতো। হাছান মাহমুদের পরিবারের সদস্যদের রাঙ্গুনিয়া ছাড়াও চট্টগ্রাম শহরে বিপুল সম্পত্তি ও ভবন রয়েছে। যার সবই গড়ে উঠেছে গত ১৫ বছরে।
news24bd.tv/SHS