গৃহবধূর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে স্বামী-শ্বাশুড়িকে পুলিশে সোপর্দ

সংগৃহীত ছবি

দাফনের সময় 

গৃহবধূর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে স্বামী-শ্বাশুড়িকে পুলিশে সোপর্দ

অনলাইন ডেস্ক

সাবিকুন্নাহার পপি (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ বাবার বাড়ি নিয়ে আসেন স্বামী ও শ্বাশুড়ি। এরপর তার মরদেহ  দাফনের প্রস্তুতি চলছিল। এসময় তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে বাবার বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয় পপিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।  

এমন সন্দেহে স্বামী রায়হান পারভেজ (৩২) ও শাশুড়ি আবেদা খাতুনকে (৫৫) পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পপির মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) সকালে এ ঘটনাটি ঘটেছে কাশিয়ানী উপজেলার  রাতইল ইউনিয়নের শংকরপাশা গ্রাম। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার গৃহবধূ সাবিকুন্নাহার ওই গ্রামের হাবিবুর শিকদারের মেয়ে।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলা সদরের ভাড়া বাসায় ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের।

সাবিকুন্নাহারের মা রিজিয়া বেগম বলেন, দেড় বছর আগে আমার মেয়ের সাথে পারিবারিকভাবে খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার আইচগাতী গ্রামের রায়হান পারভেজের  বিয়ে হয়। মেয়ের স্বামী টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কর্মরত। ৫ মাস বয়সি একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে তারা সেখানে ভাড়া বাসায় বসবাস থাকত।  

প্রায়ই ঝগড়া হতো, টাকা-পয়সা চেয়ে আমার মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আমার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে মেয়ে জামাই ও তার পরিবারের লোকজন। তার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

রিজিয়া বেগম আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমার ছোট ছেলে সোহাগকে জামাই রায়হান ফোন করে জানায় সাবিকুন্নাহার অজ্ঞান হয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমার বড় ছেলে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এর কিছুক্ষণ পর তারা জানায় আমার মেয়ে মারা গেছে। মরদেহ নিয়ে স্বামী ও শাশুড়ি কাশিয়ানীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। দুপুর ২টার দিকে মরদেহ নিয়ে তারা আমাদের বাড়িতে আসেন। পরে লাশের দাফন-কাফনের প্রস্তুতি শুরু করা হয়।  

এরই মধ্যে তার  শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ হয়। মরদেহের সাথে আসা ওই ২ জনকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেওয়া হয়। পরে বুধবার সকালে তাদের পুলিশে সোপর্দ করেন ইউপি চেয়ারম্যান।  

কাশিয়ানী থানার(ওসি)মো. জিল্লুর রহমান  জানান, ওই গৃহবধূর  শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।  

তবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী ও শ্বাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলা ঘটনাস্থল সংশ্লিষ্ট থানায় হবে বলে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান।

news24bd.tv/কেআই