‘বৃষ্টি বোমার’ কারণে বন্যা ও ভূমিধস!

ছবি, নোয়ার সৌজন্যে

‘বৃষ্টি বোমার’ কারণে বন্যা ও ভূমিধস!

অনলাইন ডেস্ক

২০২৩ সালে বৈজ্ঞানিক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখানো হয়, ১৯৫১ সাল থেকে২০২০ সালের মধ্যে ভারতে বর্ষা মৌসুমে মোট ৫৭৪টি  নদী দিয়ে হঠাৎ বেশি পানি প্রবাহ দেখা গেছে। এই নদীগুলিকে বলা হচ্ছে “বায়ুমণ্ডলীয়”।

পরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (IIT) এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের একটি দল, যারা গবেষণায় জড়িত ছিল, তারাও দেখেছে যে ১৯৮৫ থেকে ২০২০ সালের বর্ষা মৌসুমে ভারতের ১০টি সবচেয়ে গুরুতর বন্যার মধ্যে সাতটি বায়ুমণ্ডলীয় নদীর সাথে যুক্ত ছিল।

সমীক্ষায় বলা হয়েছে যে সাম্প্রতিক দশকগুলিতে ভারত মহাসাগর থেকে বাষ্পীভবন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির একজন বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানী ডঃ রক্সি ম্যাথিউ কোল বিবিসিকে বলেছেন, "বর্ষা মৌসুমে ভারতীয় উপমহাদেশের দিকে পরিবাহিত আর্দ্রতার পরিবর্তনশীলতা (আরো ওঠানামা) বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সারা দেশে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যা বেড়েছে। "

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায়ই অতিমাত্রার বন্যা দেখা যাচ্ছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইরাক, ইরান, কুয়েত, জর্ডান– প্রতিটি দেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে।

এর সঙ্গে ছিল তীব্র বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি ও অতি মাত্রায় বৃষ্টিপাত। আবহাওয়াবিদরা পরে দেখতে পান ওইসব অঞ্চলের আকাশ বা বায়ুমণ্ডল রেকর্ড পরিমাণ আর্দ্রতা বহন করছে। এর দুই মাস পরে চিলিতে মাত্র তিন দিনে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আকাশ থেকে এত বেশি পানি ঝরেছিল যে এটি আন্দিজ পর্বতের কিছু অংশের তুষারও গলিয়ে ফেলে। এতে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়। এক বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে বন্যা আঘাত হানে। যাকে সেই দেশের রাজনীতিবিদরা ‘রেইন-বোমা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

বর্তমানে ভারতের কিছু রাজ্যে ও বাংলাদেশের বেশ কিছু অঞ্চলেও ‘এই বৃষ্টি বোমা’র কারণে বন্যা হচ্ছে কিনা এ নিয়ে গবেষণার দাবি রাখে বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব ঘটনা বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলোর কারণে হয়েছে, যা ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। বায়ুমণ্ডলীয় নদীগুলো প্রতিনিয়ত দীর্ঘ, প্রশস্ত এবং প্রায়ই ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছে। এই ‘আকাশের নদী’ বা ‘উড়ন্ত নদী’ হলো ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডল পর্যন্ত লম্বা ও প্রশস্ত জলীয় বাষ্পের স্তম্ভ, যার উদ্ভব হয় সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল থেকে, পরে এগুলো ঠান্ডা মেরু অঞ্চলের দিকে সরতে থাকে। এই উড়ন্ত নদীগুলো পৃথিবীর মধ্য-অক্ষাংশ জুড়ে চলাচল করা মোট জলীয় বাষ্পের প্রায় ৯০ শতাংশ বহন করে। (সূত্র: বিবিসি ও নেচার)

news24bd.tv/ডিডি