বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স থেকে নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবেন?

বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া মাঙ্কিপক্স থেকে নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবেন?

অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি বেশ চর্চায় রয়েছে আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত এমপক্স বা মাঙ্কিপক্স। কারণ ওই অঞ্চলের বাইরে একাধিক দেশেও এটি ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে রোগটি আমলে নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

ক্লেড-১ নামে পরিচিত মাঙ্কিপক্সের নতুন স্ট্রেন ২০২২ সাল থেকেই আফ্রিকান দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।

গুটিবসন্তের একই গোত্রীয় ভাইরাস হলেও মাঙ্কিপক্স সাধারণত অনেক কম ক্ষতিকারক। প্রথমে এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এখন এটি মানুষ থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে।

এই বছরের শুরুর দিকে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো (ডিআরসি) জানিয়েছিলো, গত বছরের জুন মাস পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে।

ডিআরসি সরকার ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মাঙ্কিপক্সকে মহামারি ঘোষণা করেছিলো।  

এদিকে গত সপ্তাহে আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, এখন অন্তত ১৩ টি আফ্রিকান দেশে মাঙ্কিপক্স সনাক্ত হয়েছে। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় সনাক্তের হার ১৬০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১৯ শতাংশ বেশি।  

আফ্রিকার বাইরে এশিয়ার দেশ পাকিস্তানে একজনের দেহে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দেশটির ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেস মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছে, ওই ব্যক্তি সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে এসেছেন।

তবে তিনি ভাইরাসের কোন স্ট্রেনে আক্রান্ত তা জানার চেষ্টা করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সুইডেনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা দেশটিতে এই ভাইরাসের আক্রান্ত একজনের খবর নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্তের শরীরে ক্লেড-১ স্ট্রেন ছিলো বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। জানা গেছে, ওই ব্যক্তি আফ্রিকায় সংক্রমিত হয়েছিলেন, বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।

মাঙ্কিপক্সের ক্লেড-১ সাধারণত বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি) মাঙ্কিপক্সের ঝুঁকি সতর্কতার স্তরকে "নিম্ন" থেকে বাড়িয়ে "মধ্যম" করেছে। পাশাপাশি যেসব অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি, সেসব অঞ্চল থেকে আসা ভ্রমণকারীদের মধ্যে উচ্চ সচেতনতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে।  

আরও পড়ুন: পাকিস্তানেও এমপক্স ভাইরাস শনাক্ত: স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ

এদিকে বাংলাদেশেও মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স সচেতনতায় বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্ধারিত হটলাইনে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এই ভাইরাসের কারণে বেদনাদায়ক ফুসকুড়ি, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া এবং জ্বর হতে পারে। শরীরে এসব লক্ষণ দেখা দিলে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অথবা সংক্রমিত দেশ ভ্রমণের ২১ দিনের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দিলে ১৬২৬৩ ও ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মাংকিপক্সে এ বছরে কঙ্গোতে নিহতের সংখ্যা ৫৪৮

আফ্রিকা সিডিসির প্রধান ডা. এনগাশি এনগোঙ্গো আল জাজিরাকে বলেন, এই ভাইরাসটির লক্ষণ "দুই থেকে চার সপ্তাহ" স্থায়ী হতে পারে। তিনি এই ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে "ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির মূল বিষয়গুলো" মেনে চলতে বলেছেন। পাশাপাশি নিয়মিত হাত ধোয়া, যারা অসুস্থ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এড়িয়ে চলতে এবং তাদেরকে আলাদা জায়গায় রাখতে ও উপসর্গ দেখা গেলে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়া মাঙ্কিপক্স থেকে সুরক্ষায় ভ্যাকসিনও বেশ কার্যকরী।

উল্লেখ্য, ক্রমবর্ধমান এই প্রাদুর্ভাবের জন্য আফ্রিকান ইউনিয়নের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা তাদের নিজস্ব জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পরদিনই জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করেছিলো।

news24bd.tv/SC