প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সব শক্তি এক হয়েছে: শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান

প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সব শক্তি এক হয়েছে: শামীম ওসমান

অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, সব শক্তি এক হয়েছে জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ৭১ সালে বহু বড় বড় শক্তি এসেছিল। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়েরা তখন বন্দুকও দেখে নাই। কিছু ক্ষয়ক্ষতি হবে, কিন্তু বিন্দু পরিমাণ টেনশন করবেন না।

শেখ হাসিনাকে এক চুল সরানো ক্ষমতা এদের বাবারও নাই। আমরা প্রস্তুত থাকি, যাতে ঢাকা পর্যন্ত যেতে পারি। মুখে মুখে হেডাম দেখাবেন না, অরজিনাল যদি হেডামওয়ালা হয়ে থাকেন তাহলে প্রমাণ করেন।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে আওয়ামী লীগের এক কর্মী সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নারায়ণগঞ্জের বিষয়ে অবগত আছেন এবং তিনি নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য ম্যাসেজ দিয়েছেন, এটা সরকারি কোনো ম্যাসেজ না। কয়েকটা দিন আপনারা কেউ ফাঁকিবাজি করবেন না। এটা করলে নিজেই বাঁচবেন না। আমার সমাবেশ করার কথা নেত্রীকে বলেছি, তিনি বলেছেন এখন না।

তুমি নেতাকর্মীদের বলে দাও যার যার এলাকায় ও ওলি-গলিতে তারা যাতে পাহারায় বসে। স্বাধীনতা বিরোধী জঙ্গি যাতে রাস্তায় না নামতে পারে।  অনেক হাইব্রিড ঘরে বসে আছে।

তিনি বলেন, ধরে নিলাম প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকবে না, তাহলে কে থাকবে? যারা রাস্তার মধ্যে মেয়েদের উলঙ্গ করে কাপড় খুলে নিয়ে হাত দিয়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে তারা? যারা মেট্রোরেলে আগুন দিচ্ছে তারা? আমাদের সাধারণ ছাত্রদের কানের ওপর বন্দুক দিয়ে তারা এই গেইমটা খেলছে।

তিনি আরো বলেন, ছাত্ররা যদি তাদের থেকে সরে যেত, ছাত্র নামটা যদি না থাকতো, তাহলে তাদের সঙ্গে মোকাবেলা করা আমার কাছে ১ ঘণ্টার ব্যাপার।

ছাত্রদের সব দাবি তো পূরণ করা হয়েছে, আমাদের দল থেকে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আওয়ামী লীগেরও কিন্তু মোশতাক ছিল, সামনেও থাকবে। আমার ৩ তারিখের মিটিং ক্যান্সেল, আপনারা যার যার এলাকায় অবস্থান নেন। অবশ্য আপনারা নিজেরাই টের পাবেন। কিন্তু এমনভাবে অবস্থান নিবেন না, যেখানে আপনাদের ক্ষতি হয়ে যাবে। তবে কেউ যদি বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের আঘাত করতে আসে, সেই হাত নিয়ে যাতে ফেরত না যায়।

শামীম ওসমান বলেন, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জামায়াত এবং শিবিরকে বাংলাদেশে ব্যান করা হবে। এটা আসলে অনেক আগেই করা উচিত ছিল। এর আগে আমাদের আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গলা কেটে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। ওরা ওদের মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করবে। তবে আল্লাহর উসিলায় জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা আগেও ক্ষমতায় ছিলেন, এখনো আছে, সামনেও থাকবে।

তিনি বলেন, সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনেন, আজকের রাত স্বাভাবিক রাত না। সাইনবোর্ড, চিটাগংরোড ওইসব এলাকায় যারা আছেন, আপনারা সবাই প্রস্তুত থাকবেন। মরার জন্য কিন্তু কেউ প্রস্তুত থাকবেন না। আমরা অলরেডি কিন্তু আক্রান্ত হয়েছি। আমরা কাউকে আঘাত করি নাই, হামলা করি নাই, আগুন দেই নাই, কোন বোনের গাঁয়ে হাত দেই নাই। আমরা অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছি। আর এটা শুধু জামাত-শিবির ও বিএনপির কাজ না, ডক্টরসাব থেকে শুরু করে সাদা-কালা অনেকে জড়িত হয়ে গেছে।  

শামীম ওসমান বলেন, যারা আমার শীতল বাস পুড়িয়েছেন, শাহ নিজামের পার্ক পুড়িয়েছেন, আওয়ামী লীগ অফিস পুড়িয়েছেন, দোকানপাট লুট করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- আপনাদের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা-বাণিজ্য সব ঠিকানা আমাদের নেয়া হয়ে গেছে। আমরা কিন্তু আঘাত করি নাই, করার দরকারও নাই। জনগণ যদি ক্ষিপ্ত হয়ে আপনাদের বাড়ি-ঘরে আঘাত করে আমরা কিন্তু জনগণের বিপক্ষে যেতে পারবো না। নারায়ণগঞ্জে এখন আর কেউ রাস্তায় নামার সাহস দেখিয়েন না। বাহিরের লোকদের শেল্টার দেওয়ার সাহস দেখিয়েন না। কারণ আজকের পরে কালকের দিনে কিন্তু আবার সূর্য উঠবে। আমাদের মারবেন, আমাদের নেক্সট প্রজন্ম আছেন।

তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ আপনারা সবাই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। মহিলা আওয়ামী লীগ ওয়াচ করে খবর নেন কোথায় কী হচ্ছে। আমরা সবাই প্রস্তত, আপনারা বলবেন কখন দাওয়াত খেতে আসতে হবে। এমন দাওয়াত খামু যাতে জীবনে আর দাওয়াত না দেয়। আমরা কারো কোনো ক্ষতি করতে চাই না। সাধারণ ছাত্ররা আমাদের সন্তান। শেখ হাসিনা না থাকলে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের থেকেও বেশি খারাপ হবে।

এমপি শামীম ওসমান বলেন, আজকে যে মেয়েরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছে, সেই মেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাবে, রাস্তায় বের হতে পারবে না। বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো চেষ্টা করা হবে, এই চেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবে হচ্ছে। নয়তো মমতা ব্যানার্জি বলে না যে, বাংলার দরজা খোলা আছে, তোমরা নক করলে আমরা আশ্রয় দেবো। নয়তো ড. সাব ফ্রান্সে বসে বলে না যে, আগামী নির্বাচনে দিতে হবে ইউনূসের মতো সুদখোর লোকদের।  

news24bd.tv/তৌহিদ