স্বর্ণ-হীরা চোরাচালানে দেশ থেকে পাচার ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা

সংগৃহীত ছবি

স্বর্ণ-হীরা চোরাচালানে দেশ থেকে পাচার ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বর্ণ ও হীরা চোরাচালানে জড়িতদের ধরতে সরকারকে অভিযান পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন-বাজুস। সোমবার (৩ জুন) সোনা ও হীরা চোরাচালান বন্ধে করণীয় শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে পঠিত লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশের বিমানবন্দরগুলো দিয়ে স্বর্ণ ও হীরা চোরাইপথে প্রবেশ করে এবং এক্ষেত্রে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসকল স্বর্ণ ও হীরা ঝিনাইদহের মহেশপুর ও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হয়।

গত কয়েকমাসে প্রায় ২৬ কোটি টাকার স্বর্ণ আটক করা হয়েছে, এবং ২০২৩ সালে প্রায় ১০০ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে। এক বছরে স্বর্ণ-হীরা চোরাচালানে দেশ থেকে পাচার ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।  বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে ২২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ জমা হতো এবং সরকার ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করতে পারতো।

চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেট স্বর্ণের বাজারে অস্থিরতা ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে প্রতিনিয়ত স্থানীয় পোদ্দার বা বুলিয়ন বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হচ্ছে।

পোদ্দারদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সোনার পাইকারি বাজার। পোদ্দারদের সঙ্গে চোরাকারবারিদের সিন্ডিকেটের সু-গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মূলত এই চোরাকারবারিদের একাধিক সিন্ডিকেট বিদেশে সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হয়। দেশে চলমান ডলার সঙ্কট ও অর্থপাচারের সঙ্গে সোনা চোরাচালানের সিন্ডিকেট সমূহের সু-সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, অবৈধ পথে হীরা আমদানির বড় কারণ শুল্ক ফাঁকি। হীরা আমদানিতে শুল্ককর অনেক বেশি। যেমন বন্ড সুবিধা ছাড়া অমসৃণ হীরা আমদানিতে কর ৮৯ শতাংশ। মসৃণ হীরা আমদানিতে কর প্রায় ১৫১ শতাংশ। এই শুল্ককর ফাঁকি দিতেই মূলত অবৈধ পথে বিপুল পরিমাণে হীরা আসছে। গত ১৯ বছরে এই মূল্যবান রত্ন আমদানিতে সরকার মাত্র ১২ কোটি টাকার রাজস্ব পেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- দেশের হীরার বাজার প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। এই হীরার বাজার পুরোটাই চোরাচালান নির্ভর হয়ে আছে। সোনা চোরাচালানের খবর পাওয়া গেলেও, আমরা হীরা চোরাচালানের খবর না পাওয়া রহস্যজনক। হীরা চোরাচালানের সঙ্গে কারা জড়িত, তাও দ্রুত চিহিৃত করতে আইন- প্রয়োগকারি সংস্থাগুলোর জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করছে বাজুস।

সংবাদ সম্মেলনে স্বর্ণ ও হীরা চোরাচালান প্রতিরোধে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে পৃথক সরকারি মনিটরিং সেল গঠন করার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি, বিদেশ থেকে আসার সময় একই ধরণের অলংকার দুটির বেশি না আনার নিয়ম করার দাবি জানিয়েছে বাজুস।

সংবাদ সম্মেলনে বিদেশ থেকে আসার সময় ট্যাক্স ফ্রি সোনার অলংকার ১০০ গ্রামের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম আনার নিয়ম করার দাবি জানানো হয়। একইসাথে ব্যাগেজ রুল সংশোধন করে সোনার বার আনা বন্ধ করার দাবিও উত্থাপন করে সংগঠনটি।

বছরে ৮০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সোনা ও ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকার হীরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান বাজুস নেতারা।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক