আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানের গলাকাটা মরদেহ, স্বামী আটক

আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানের গলাকাটা মরদেহ, স্বামী আটক

অনলাইন ডেস্ক

বগুড়ার বনানী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে স্ত্রী ও সন্তানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। তার নাম আজিজুল হক।

রোববার (২ জুন) বেলা ১২টার দিকে ওই হোটেল থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- আশা মনি (২২) ও তার শিশুপুত্র আবদুল্লাহ হেল রাফি। আশা মনির স্বামী আজিজুল হক (২৫) সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রামে কর্মরত আছেন এবং তার বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলায়। তারা গতকাল শনিবার দিবাগত সন্ধ্যা ৭টার দিকে তমা ও মিরাজ পরিচয়ে হোটেলে ওঠেন। বাড়ি উল্লেখ করেন রংপুরের পীরগঞ্জ।

 

নিহতের পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, প্রায় তিন বছর আগে আজিজুলের সঙ্গে বিয়ে হয় আশা মনির। তাদের সংসারে ১১ মাস বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান হওয়ার পর থেকেই আশা তার বাবার বাড়ি নারুলীতে থাকেন। এর মধ্যে দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসেন আজিজুল। ছুটি শেষে শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা তার। কিন্তু এর মধ্যে সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বনানীর ওই হোটেলে যান। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করে হোটেল থেকে বের হন। এরপর আজিজুল তার বউ ও ছেলে হারিয়ে গেছে বলে শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন।

এ ব্যপারে বনানীর শুভেচ্ছা হোটেলের ম্যানেজার রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সকালে হোটেলে ফিরে আজিজুল জানান তিনি রুম ছেড়ে দেবেন। এই সময় ম্যানেজার রুম বুঝিয়ে চাইলে তালবাহানা শুরু করেন। ম্যানেজার চাপাচাপি করলে একপর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন। রোববার সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ হত্যার ঘটনা পুলিশকে জানায়। এরপর থেকে আজিজুল হক পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

আশা মনির চাচা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সকাল ৯টার দিকে আমরা নিখোঁজের বিষয়ে মাইকিং করি। আর আশা মনির বাবা জামাইকে নিয়ে সদর থানায় যায় জিডি করতে। কিন্তু জিডি করার সময় জামাই আজিজুল তালবাহানা করে চলে যায়। এর একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে বনানী থেকে ওদের মরদেহ উদ্ধারের খবর আসে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে ছুটে যাই।

এদিকে মেয়ে ও নাতি হারিয়ে বাকরুদ্ধ আশা মনির বাবা আশাদুল ইসলাম বলেন, যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি আজিজুলের ফাঁসি চাই।

পারিবারিক কলহ থেকে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে ধারণা করছেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম। তিনি বলেন, আজিজুল একজন সেনা সদস্য। তার স্ত্রী ও সন্তানকে হোটেল কক্ষে শনিবার রাতে পরিকল্পতভাবে হত্যা করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মামলা হবে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে আছে।

news24bd.tv/তৌহিদ