বরিশালের ফরচুন সু-কম্পানির শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকাল ৪টায় নগরীর কাউনিয়ার বিসিক এলাকায় বিক্ষোভ করে তারা। বিক্ষোভ বন্ধে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব আনসার বাহিনী শ্রমিকদের ওপর গুলি করলে আন্দোলন সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ সময় আনসারদের গুলিতে প্রতিষ্ঠানের ৪ শ্রমিক আহত হন।
আহতরা হলেন- সুইং বিভাগের কর্মচারী মেহেদী হাসান, কামরুল হাসান, ফিনিসিং বিভাগের সুমন ও আবুল হাসান। তাদের চারজনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিক্ষুদ্ধ শৃমিকরা প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়।
শ্রমিকদের হামলায় কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান আহন হন। পরে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করেন।
ফরচুন সু-কোম্পানির স্বত্বাধীকারী ও ফরচুন বরিশালের মালিক মিজানুর রহমান জানান, আনসার সদস্যদের সঙ্গে শ্রমিকদের ঝামেলা হয়েছে। তবে শ্রমিকদের কোনো বেতন-বকেয়া নেই।
ফরচুন সু-কোম্পানির শ্রমিক লিজা আক্তার জানান, তাদের তিন মাসের বেতন বকেয়া ছিল। ওভারটাইমও কোনো শ্রমিককে দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার তা পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার দুপুরে বকেয়া চাইতে গেলে তাদের ১৫ দিনের টাকা পরিশোধ করার কথা বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হলে আচমকা সুইং বিভাগের কর্মচারী মেহেদী হাসানের ওপর আনসার সদস্য গুলি করে। এরপর তারা এলোপাথারি আরো গুলি চালালে তিন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। এ খবর ছড়িয়ে পরলে পুরো প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন ছড়িয়ে পরে।
অপর শ্রমিক সাইফুল জানান, তাদের বেতন শিটে স্বাক্ষর নেওয়া হয় ১২ হাজার টাকা। দেওয়া হয় ৬ হাজার। তাও আবার তিন মাসের বকেয়া। ওভার টাইম করানো হলেও টাকা দেওয়া হয় নামেমাত্র। এর প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
সরেজমিনে বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় ফরচুন সু-কোম্পানিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির ৫টি ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে শ্রমিকরা। ভবনের দরজা-জানালা ও গেট ভাঙচুর করা হয়েছে। শ্রমিকদের পরিবহনের জন্য রাখা ৫টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে কাউনিয়া থানা পুলিশ এসে শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কাউনিয়া থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা ভাঙচুর করে। চারজন শ্রমিক ও কাউনিয়া থানার পরিদর্শক তদন্ত আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ’
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল মোল্লা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায়ই শ্রমিক অসন্তোষ হয়। এর প্রধান কারণ কাজ করিয়ে শ্রকিদের বেতন দেওয়া হয় না। বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে গেলে উল্টো তাদের ওপর আনসার সদস্যরা গুলি করে। এরপর শ্রমিকরা ভাঙচুর করে। ’
news24bd.tv/DHL
