ইসরায়েলের রাফা অভিযান কি নেতানিয়াহুকে থামাতে পারবে?

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের রাফা অভিযান কি নেতানিয়াহুকে থামাতে পারবে?

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার সাত মাস হয়ে গেছে। পদ্ধতি এবং হতাহতের দিক দিয়ে হামলাটি ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে গুরুতর ছিলো। এর বিপরীতে ইসরায়েলি জবাব আরও ভয়ানক ও আগ্রাসী হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান দেখভাল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি পুরো বিশ্বকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করতে বাধ্য করছে।

ঘনবসতিপূর্ণ রাফা শহরে ইসরায়েলি হামলার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি আরও বেগতিক হয়েছে। সোমবার (৬ মে) রাফায় হামাসের স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারির বরাত দিয়ে টাইমইস অব ইসরায়েল জানায়, রাফা শহরে ৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

হাগারি আরও জানান, রাফার পূর্বাঞ্চলে অভিযানের প্রস্তুতির মধ্যেই এই হামলা চালানো হয়।

এর আগে গত সোমবার রাফার এই এলাকা থেকে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এই মুহূর্তে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি গাজা থেকে পালিয়ে এসে রাফায় আশ্রয় নিয়েছে।

রাফায় অভিযানের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল দুটি লক্ষ্য অর্জন করতে চাচ্ছে- হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলিদের ফিরিয়ে আনা এবং হামাসকে নির্মূল করা। এক ভাষণে নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে একমাত্র সামরিক চাপের মাধ্যমেই বন্দীদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

নেতানিয়াহুর বক্তব্য অনুযায়ী, রাফা সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমেই কেবল হামাসের সামরিক ও সাঙ্গগঠনিক সক্ষমতা ধ্বংস করা সম্ভব। সফলভাবে অভিযান পরিচালনা করায় তিনি ইসরায়েলি সৈন্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং নিহত সৈন্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

সোমবার হামাস কাতার ও মিশরের মধ্যস্ততাকারীদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হওয়ার কথা জানায়। ৪২ দিনব্যাপী এই যুদ্ধবিরতির তিনটি ধাপ রয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে হামাস গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের পূর্নাঙ্গ অপসারণ ও বন্দী বিনিময় করতে চায়।

পরের দিন ইসরায়েল হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দেয়। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের রাজি হওয়াকে নেতানিয়াহু রাফায় ইসরায়েলি অভিযান প্রতিহত করার চক্রান্ত হিসেবে দেখেছেন। তিনি ইসরায়েলের লক্ষ্যের সাথে হামাসের লক্ষ্যের বিস্তর তফাৎ তুলে ধরে বলেন, ইসরায়েল এমন কোনো প্রস্তাব মেনে নিতে পারে না যা আমাদের জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে। বন্দী মুক্তি ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহু কাতারে অবস্থানরত মধ্যস্ততাকারীদের নির্দেশ দেন।

নেতানিয়াহুর পরামর্শক দিমিত্রি জেন্ডেলমান জানান, ইসরায়েল এখনও রাফায় অভিযানের পরিকল্পনা বাদ দেয়নি। মঙ্গলবার (৭ মে) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান ইউয়াভ গ্যালান্ট জানান, বন্দীদের ফিরে আসা এবং হামাসের বিপক্ষে জয়লাভ নিশ্চিতের আগ পর্যন্ত ইসরায়েল রাফায় অভিযান চালানোর চিন্তা বাদ দেবে না।

ইসরায়েল-গাজা সীমান্তের দক্ষিণে অবস্থানরত সৈন্যদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে গ্যালান্ট জানান, গতকাল আমি আমাদের সোইন্যদের রাফায় অগ্রসর হতে এবং সীমান্ত দখলে নিতে নির্দেশ দিয়েছি। গাজা ও রাফা থেকে হামাসকে নির্মূল করা ও বন্দীদের মুক্তির আগ পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলবে।

ইসরায়েল রাফা অভিযান থামাবে না বলেই আপাতত বুঝা যাচ্ছে। যেমনটা নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল একা হয়ে গেলেও হামাসের বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক অভিযান চলবে।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক