সরকারি চাকরি থেকে অবসরগ্রহণের পর শমসের মুবিন চৌধুরী বিএনপির দাপুটে নেতা ছিলেন। দলের পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণীর বিষয়গুলো দেখতেন। এরপর যোগ দেন একসময় বিকল্প ধারায়। পরে এবার নতুন নিবন্ধিত দল তৃণমূল বিএনপির পক্ষ থেকে সিলেট-৬ আসনে সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে ভোটযুদ্ধে লড়াই করেন।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন রয়েছে, তৃণমূল বিএনপিকে আওয়ামী লীগ প্রশ্রয় দিচ্ছিল। সে হিসেবে শমসের মুবিন চৌধুরী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন।
১ ‘শমসের মুবিন ঠেকাও’ নীতি
গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের আওয়ামী লীগের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে দলের উচ্চপর্যায় থেকে শমসের মুবিন চৌধুরীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ অবস্থায় অনেকেই প্রকাশ্যে প্রচারণায় নামেন। এতে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও এদের সমর্থকরা প্রতিশোধ হিসেবে অন্যদের ভোট দিয়েছেন বলে জানা গেছে। মানে আওয়ামী বিরোধী ভোটারদেরও উদ্দেশ্য ছিল ‘শমসের মুবিন ঠেকাও’ নীতি।
২ জনবিচ্ছিন্নতা
নুরুল ইসলাম নাহিদ মাঠের রাজনীতি একসময় করেছেন। জনগণের সুখ দুঃখে পাশে থেকেছেন। দীর্ঘজীবনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। উল্টোদিকে এ আসনের ভোটার খুব কম সময়ই শমসের মুবিন চৌধুরীকে কাছে পেয়েছেন। কারণ তার তিনি আগাগোড়া আমলা ছিলেন চাকরিসূত্রে। পরে ঢাকাতেই বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন। ফলে জনবিচ্ছিন্নতা ছিল তার বরাবরই।
৩ ভোট ভাগ হয়েছে, কিন্তু শমসের পাননি
স্থানীয়ভাবে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই বিজয়ী নুরুল ইসলাম নাহিদের বিপক্ষে ছিলেন। কারণ নাহিদ রাজনীতিতে কয়েকবছর যাবত তেমন সক্রিয় ছিলেন না। কিন্তু নাহিদ বিরোধী আওয়ামী লীগের একটি অংশের ভোট স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার পেয়েছেন, শমসের পাননি।
৪, ক্লিন ইমেজে
নুরুল ইসলাম নাহিদ ক্লিন ইমেজের দিক থেকে শমসের মুবিন চৌধুরীর কাছ থেকে এগিয়ে ছিলেন। দীর্ঘদিন বাম রাজনীতি করা, মন্ত্রী থাকাকালে নিজে স্বচ্ছ থাকা এসব কারণে এলাকায় তিনি ভালো মানুষ হিসেবেই পরিচিত। অন্যদিকে শমসের মুবিন চৌধুরীকে সুযোগ সন্ধানী মানুষ ভাবা হয়।
৫ বারবার দলবদলে সংশয়
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘শমসের মূলত বিএনপির নেতা ছিলেন। পরে তিনি বিকল্পধারায় যোগ দেন। এখন তৃণমূল বিএনপিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর এই দলবদলের বিষয়টি অনেক ভোটার ভালোভাবে নেয়নি। ভোটাররা অনেকেই ভেবেছেন, যার দলেরই তো ঠিক নেই। তাকে ভোট দিয়ে এলাকার উন্নতি হবে না। দরকার এলাকার উন্নতি।
news24bd.tv/ডিডি