জুমার খুতবায় রাসুলুল্লাহ (সা.) সবাইকে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতে উৎসাহিত করতেন। কেননা এটাই তাদের কল্যাণ লাভের বড় মাধ্যম। তারপর মৃত্যুর বিভীষিকা বর্ণনা করে সতর্ক করতেন। কেননা মানুষ দুনিয়ার মায়ায় পড়ে নিজেকে দুনিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা ভেবে বসে এবং মৃত্যুকে এড়িয়ে থাকতে চায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন জুমার খুতবা দিতে দাঁড়াতেন, তখন (কখনো কখনো) তাঁর চক্ষুদ্বয় লাল হয়ে যেত, আওয়াজ উঁচু হতো এবং চেহারা মোবারকে ক্রোধের লক্ষণ পরিলক্ষিত হতো।
অনাবৃষ্টি দেখা দিলে ও বৃষ্টির প্রয়োজন অনুভব করলে তিনি খুতবাতেই বৃষ্টির জন্য দোয়া করতেন। মসজিদে লোকেরা একত্র হলেই তিনি বের হয়ে আসতেন। মসজিদে প্রবেশ করেই সালাম দিতেন। মিম্বারে আরোহণ করে উপস্থিত মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরিয়ে আরেকবার সালাম দিতেন। তারপর মিম্বারে বসতেন। এরই মধ্যে বেলাল (রা.) আজান দেওয়া শুরু করতেন। আজান শেষ হলে তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা শুরু করতেন। খুতবা প্রদানকালে তিনি লাঠি বা ধনুকের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়াতেন। তাঁর মিম্বারে তিনটি সিঁড়ি ছিল। মিম্বার নির্মাণের আগে তিনি খেজুরগাছের একটি গোড়ার ওপর দাঁড়াতেন। মসজিদের মাঝখানে মিম্বার স্থাপিত হয়নি; বরং পশ্চিম পাশে স্থাপিত হয়েছিল। মিম্বার ও দেয়ালের মধ্যে মাত্র একটি ছাগল চলাচলের দূরত্ব ছিল।
তিনি যখন জুমা ছাড়া অন্য সময় মিম্বারে বসতেন কিংবা জুমার দিন খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে দাঁড়াতেন, তখন সাহাবিরা তাঁর দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন। তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা দিতেন। তারপর সামান্য সময় বসতেন। অতঃপর দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় খুতবা দিতেন। খুতবা শেষ করলেই বেলাল (রা.) ইকামত দেওয়া শুরু করতেন। তিনি মুসলিমদের খুতবার সময় ইমামের নিকটবর্তী হওয়ার আদেশ দিতেন এবং চুপ থাকতে বলতেন। তিনি বলতেন, জুমার দিন খুতবার সময় যে ব্যক্তি তার পাশের ব্যক্তিকে বলবে, চুপ থাকো, সে অনর্থক কাজ করল। আর যে ব্যক্তি অনর্থক কাজ করবে তার জুমা বাতিল হয়ে যাবে (মর্যাদা ও সওয়াব নষ্ট হবে)। জুমার নামাজ শেষে তিনি স্বীয় ঘরে প্রবেশ করতেন এবং দুই রাকাত জুমার সুন্নত নামাজ আদায় করতেন। তিনি জুমার নামাজের পর চার রাকাত সুন্নত পড়ারও আদেশ দিয়েছেন।
জাদুল মাআদ থেকে মো. আবদুল মজিদ মোল্লার সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর।
news24bd/আজিজ