বগুড়া জিলা স্কুলের এসএসসি ১৯৯৭ সালের ব্যাচের সহপাঠীদের নিয়ে দিনব্যাপী এক বর্ণিল মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এদিন দীর্ঘ ২৫ বছর পর দেখা স্কুল জীবনের সহপাঠীদের সঙ্গে। সকাল থেকে স্মৃতিচারণ, অ্যাসেম্বলি, জাতীয় সঙ্গীত, শপথ পাঠ, প্রয়াত সহপাঠীদের স্মরণে নিরবতা পালন করার পর বর্ণাঢ্য র্যালি শেষে খেলাধুলাসহ নানা অনুষ্ঠানমালা চলে রাত পর্যন্ত।
অনেকদিন না দেখা বন্ধু, সহপাঠীদের পেয়ে সবাই ছিল আনন্দে। প্রায় ২৫ বছর পর সেই স্কুলজীবনের বন্ধুদের সঙ্গে দিনব্যাপী আনন্দঘন পরিবেশে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চলে এ ব্যাচের জাঁকজমকপূর্ণ মিলনমেলা। দিনের শুরুতে সুন্দর সাদা, লাল, সবুজ কালার টি-শার্ট বিতরণ।
স্যারদের কড়া শাসন আশীর্বাদের মতো কাজে লেগেছে স্মৃতিচারণে বলছিল সাবেরুল। বলেন, ২৫ বছর আগে যে স্যার পিটি করেছিলেন, আজকের দিনও সেই হজরত আলী স্যার আমাদেরকে পিটি, অ্যাসেম্বলি করালেন। স্কুল জীবনের স্যার হজরত আলীকে আজকে এ অনুষ্ঠানে পেয়ে অত্যন্ত খুশি লাগছে।
৯৭ ব্যাচের নাসের বলেন, আমি এ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণি থেকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। দীর্ঘ ৮ বছর এখানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেই শৈশব এবং কৈশরে স্মৃতি বিজড়িত আজ ২৫ বছর পর বাল্য বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।
সুজন বলেন, সুদীর্ঘ ২৫ বছর পর কিছু বন্ধুর আত্ম প্রচেস্টার মাধ্যমে কিছু বন্ধুবৎসল পাগলা একত্রিত হলাম। ঐতিহাসিক এ মিলন মেলায় বার বার মনে উদয় হলো আমরা ক্লাসে আছি। মন চায় আবার সেই দশম শ্রেণিতে ফিরে যেতে। শিক্ষকদের শাসন, পড়া না পাড়লে বেতের বাড়ি, নেইল ডাউন, দুষ্টুমি, স্কুল পালানো, টিফিনের পর পালানো ও সহপাঠীর সঙ্গে খুনশুটি ইত্যাদি খুব মিস করি।
ফয়সাল মাহমুদ বলেন, এটি আমাদের ব্যাচের বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ায় এক মিলন মেলায় রূপান্তরিত হয়েছে। এই বন্ধুত্ব যেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বজায় থাকবে আমার বিশ্বাস।
এ মিলন মেলায় আগত এক বেসরকারি টেলিভিশনের কান্ট্রি নিউজ এডিটর আসিফ আহসানুল বলেন, ঐহিত্যবাহী প্রাণের প্রতিষ্ঠান বগুড়া জিলা স্কুল। এ স্কুল থেকে ১৯৯৭ সালে এসএসসি পাস করেছি। দীর্ঘদিন পর আমরা একত্রিত হয়ে সেই স্কুলের জীবনে ফিরে গেছি। স্কুল জীবনে স্যারেরা পিটি করাত, শপথ পাঠ করাত, আজকেও আমরা ওইসব করেছি। এতদিন পর এসে সহপাঠীরা একত্রিত হতে পেরে অত্যন্ত খুশি লাগছে এবং এটি অত্যন্ত সৌভাগ্যের।
তৎকালীন শিক্ষক বর্তমান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হজরত আলী জানান, তখন আমিও সবেমাত্র স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি, এরা তখন ছোট্ট সোনা। আজকে এরা অনেক বড় হয়েছে, সুনাগরিক হয়ে দেশ জাতির সেবা করছে। আজকে এদেরকে কাছে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত ও খুশি।
এ মিলন মেলার আয়োজক মহিদুল ইসলাম সরকার মিন্নাস, ময়নুল করিম তুহিন, রবি, দিনার, মানিক ও মিথুন জানান, দীর্ঘদিনের সহপাঠীদের অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ নেই। তাই সেই শৈশব-কৈশরের সহপাঠীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও গল্প করার জন্য এ মিলন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এসএসসি-১৯৯৭ এই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে মেডিকেল, ঢাবি, বুয়েট, জবি, রাবি, রুয়েট, কুয়েট, বুটেক্স, বাকৃবি, ব্যবসায়ী, প্রবাসীসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজেপি, ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত আছেন। সফলতম এই ব্যাচটির শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা শেষ করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে কর্মরত থেকে নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে।
news24bd.tv/রিমু