শিল্পের মাঝে নিজের পরিচিতি খুঁজছেন এ কোন নারী!  

নিজ হাতে আঁকা চিত্রকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে মাসুমেহ্ আতাইয়ে [ছবি: আরব নিউজ]

শিল্পের মাঝে নিজের পরিচিতি খুঁজছেন এ কোন নারী!  

সাহিদ রহমান অরিন

২০১০ সালে এসিড হামলার শিকার হন মাসুমেহ্ আতাইয়ে। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ চাওয়ায় তার শ্বশুর মুখে এসিড ছুঁড়ে অন্ধ করে দেয়। ঘটনার আট বছর পেরিয়ে গেলেও বর্বরোচিত হামলার বিচার পাননি এই ইরানি নারী। এসিড শুধুমাত্র তার দৃষ্টিশক্তিই কেড়ে নেয়নি, চেহারাকে ঝলসে বিকৃত করে দিয়েছে।

এতকিছুর পরেও থমকে যাননি মাসুমেহ্। বরং এসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও এসিড হামলায় আক্রান্তদের সহায়তায় অর্থ সংগ্রহের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহে রাজধানী তেহরানের আশিয়ানেহ্ গ্যালারিতে এসিড হামলার শিকার অন্য নারীদের নিয়ে একটি মৃৎশিল্প প্রদর্শনী করেছেন তিনি।  

৩৫ বছর বয়সী এই সাহসী নারী জানান, তিনি এসিড হামলার শিকার হওয়া নারীর পরিচয়ে পরিচিত হতে চান না।

একজন শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পেতে চান। মাসুমেহ্ বলেন, ‘শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার পরিবারকে হুমকি দিয়েছিল যে, আমরা যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি তাহলে আমার ছেলেকেও একই শাস্তি দেয়া হবে। তাই আমি বিচার পাওয়ার চেয়ে আমার ছেলের জীবনকেই বেছে নিয়েছি। ’
news24bd.tv

মাসুমেহ্ তার শ্বশুর বাড়ি ইসফাহানে থেকে পালিয়ে তেহরানে আসেন। বর্তমানে ১২ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে সেখানেই বাস করছেন। পাশাপাশি অন্যান্য অন্ধ ব্যক্তিদেরও শিল্পকর্ম শেখাচ্ছেন। তিনি পাত্র তৈরি করে তা চিত্রিত করেন।  

ইরানের শরীয়াহ আইন অনুযায়ী, কারও দুই চোখের বিনিময়ে হামলাকারীর একটি চোখ উৎপাটনের বিধান রয়েছে। সেই মোতাবেক, মাসুমেহ্ চাইলেই তার শ্বশুরের একটি চোখ তুলে নিতে পারবেন। কিন্তু সাহসী এই নারীর হৃদয়টা যে এতোটা নিষ্ঠুর নয়। শ্বশুর বাড়ির লোকদের নাকি অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। মাসুমেহ্ গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘আমি আর ওসবে জড়াতে চাইনা। এখন আমি সম্পূর্ণ স্বাধীন। ’

উল্লেখ্য, ইরানে প্রায়ই নারীদের ওপর এসিড হামলার ঘটনা ঘটে।  

সূত্র: রুদাউ মিডিয়া নেটওয়ার্ক, আরব নিউজ

সম্পর্কিত খবর