রাজধানীর বিভিন্ন ফ্ল্যাট মালিক সমিতি ও হাউজিং সোসাইটিতে কোরবানির পশু সংরক্ষণ ও জবাই করার সুযোগ দিতে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
একই সঙ্গে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা করে সেই গাইডলাইনের আলোকে কোরবানির পশু জবাইয়ের ব্যবস্থা করার আবেদনও করা হয়েছে।
রাজধানীর জাপান গার্ডেন সিটির অধিবাসী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওমর শরীফ এই রিটটি করেন। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করা হয়েছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী।
রিটে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের একটি দ্বীনি উৎসব এবং পশু কোরবানি একটি ইবাদাত। পবিত্র ঈদুল আজহায় সাধ্যমতো পশু কোরবানি করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের একটি ওয়াজিব (বাধ্যতামূলক) আমল। জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতিসহ দেশের সকল হাউজিং সোসাইটি, ফ্ল্যাট মালিক সমিতি বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের অধীনে নিবন্ধিত সোসাইটি।
‘তথাকথিত করোনাভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে পশু কোরবানি করা কিংবা কোরবানির পশুর কোনও সম্পর্ক নেই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কিংবা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন আসন্ন ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা কিংবা হাউজিং কমপ্লেক্সে পশু প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এমন অবস্থায় জাপান গার্ডেন সিটি মালিক ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি কিংবা একই ধরনের অন্যান্য হাউজিং সোসাইটি বা ফ্ল্যাট মালিক সমিতির কোনও আইনগত এখতিয়ারই নেই যে, তারা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে কোরবানির পশু প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে। ’
রিট পিটিশনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ দ্বীন পালনের অধিকার রয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা বাংলাদেশের প্রত্যেক মুসলমানের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট মালিক কল্যাণ সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি কিংবা একই ধরনের অন্যান্য হাউজিং সোসাইটি বা ফ্ল্যাট মালিক সমিতিগুলো ওই সকল হাউজিং কমপ্লেক্সে বসবাসরত মুসলিমদেরকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার পালনে বাধা সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটিতে সংঘটিত এই ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করা এবং মুসলমানদের সুষ্ঠুভাবে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করা আপনার (আদালত) এখতিয়ার ও দায়িত্ব বটে।
‘কোরবানির পশু প্রবেশে বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত দ্বীনি অধিকারে হস্তক্ষেপ এবং দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত, যা বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ২৯৫(ক) ধারা মোতাবেক একটি ফৌজদারি অপরাধ। কোরবানির পশু প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে একই ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ঢাকার অন্যান্য হাউজিং সোসাইটি, ফ্ল্যাট মালিক সমিতিও একই দায় বহন করে। ’
নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ