দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। প্রতিদিন এই জেলার তাপমাত্রা কমছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এই জেলায় বিরাজ করছে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দিনের বেলা রোদ খেলা করলেও গোধূলী থেকেই শুরু হয় কুয়াশা।
এই সময়ে গ্রামগঞ্জের মানুষ খরের পোড় (ধানের খরের ছোট ঢিবিকে আঞ্চলিক ভাষায় পোড় বলা হয়) জ্বালিয়ে আগুন পোহায়। সূর্যের দেখা মিলে আরও পরে।
এদিকে এসময়ে এই জেলায় বেড়েছে পর্যটকের ভীর। শীত উপভোগ করার জন্যই অনেকে ছুটে আসছেন বলে জানালেন তারা। নারায়নগঞ্জ থেকে আসা আলমগীর আলম জানান, পঞ্চগড়ে অনেক শীত হয়। তাই এসময়ে বেড়াতে এসেছি। এখানে দিনের বেলা রোদ থাকলেও রাতে প্রচন্ড ঠাণ্ডা। এমন ঠাণ্ডা আমাদের জেলায় কখনো পড়ে না।
তেতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীতে উঠানামা করছে। এটা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ২০১৮ সালের ৫ থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই তাপমাত্রা ছিলো। এই তাপমাত্রা ক্রমশ: কমতে থাকবে। বাড়বে ঠাণ্ডার তীব্রতা। কারণ বঙ্গোপসাগর থেকে মৌসুমী বায়ু আসা বন্ধ। তাই বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। এই সুযোগে হিমালয় থেকে আসছে উত্তর পশ্চিম মুখি হিমবায়ু। এই হিমাবায়ুর প্রভাবে পড়েছে শীত।
হিমালয়ের খুব কাছে ঢালা সমতল ভূমিতে অবস্থান হওয়ায় পঞ্চগড়কে বলা হয় হিমালয় কন্যা। এই জেলার মানুষকে প্রতিবছর তাই শীতের নানা প্রভাবের মুখোমুখি হতে হয়। শীতের তীব্রতা যতো বাড়ছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষের বাড়ছে দুর্ভোগ। পর্যাপ্ত গরম কাপড় ছাড়া পঞ্চগড়ে শীত কাটানো সম্ভব নয়। তাই গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীর বাড়লেও দরিদ্র মানুষের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
একখণ্ড কাপড় আর সূর্যের আলোর আশায় তাদের রাত কাটে। তবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রেহানুল হক জানান, প্রচণ্ড শীতকে মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য ইতোমধ্যে প্রায় দশ হাজারের মতো কম্বল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই এগুলো বিতরণ করা হবে।
এদিকে শীত বাড়ার সাথে সাথে শিশু ও বয়বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে শীতের নানা রোগে। সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বেশ কিছু রোগে আক্রান্ত রোগীরা ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। শিশু এবং বয়োবৃদ্ধদের তাই পর্যাপ্ত গরম কাপড়, খাবার এবং গোসলের জন্য গরম পানি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনসুর আলম।
নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল