আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুনর্গঠনের আশা প্রকাশ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মান ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমরা বদ্ধ পরিকর।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তাহে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন না হলে আদালতের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনেক আদেশ আমরা নিতে পারছি না। আদালতের আদেশ ছাড়া অনেক কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিমের কার্যক্রম চলমান থাকলেও ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি না থাকায় বিচার কার্যক্রম থমকে আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার গত ১৩ জুলাই অবসরে যান। অন্য এক সদস্য বিচারপতি হাইকোর্টে ফিরে গেছেন। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে কোনো বিচারপতি নেই।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় বিগত সরকারের নির্দেশে পরিচালিত গণহত্যার তথ্য উপাত্ত চেয়ে সকল গণমাধ্যম, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, প্রত্যেক জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে আমরা বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। জুলাই-আগস্ট গণহত্যার তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আহ্বান জানান চিফ প্রসিকিউটর। বিভিন্ন কবরস্থান পরিচালনাকারীদের কাছেও তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়া হচ্ছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনের এবং বিচারের সবচেয়ে বড় সাক্ষী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আমরা এ আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে মত বিনিময় করার উদ্যোগ নিয়েছি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট তাজুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে ৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এডভোকেট তাজুল ইসলাম ছাড়াও ট্রাইব্যুনালে আরও চার আইনজীবীকে প্রসিকিউটর পদে নিয়োগ দেয়া হয়। তারা হলেন-মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ এবং আব্দুল্লাহ আল নোমান।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে সংঘটিত অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করে।
বৈষম্য বিরোধী টানা ৩৬ দিনের আন্দোলন নির্মূলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তৎকালীন আওয়ামী লীগ দলীয় ক্যাডারদের হামলায় সরকারি হিসেবেই আট শতাধিক নিহত হয়েছে। এ সংখ্যা আরো বেশি বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। গুলিতে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে বহু মানুষ। এখনো চিকিৎসাধীন কয়েক হাজার মানুষ। জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হবে।
news24bd.tv/DHL