আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সিফায়েতের জন্য ওষুধ কিনতে পারছে না পরিবার

মো. সিফায়েত চৌধুরী (২৬), সংগৃহীত ছবি।

আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ সিফায়েতের জন্য ওষুধ কিনতে পারছে না পরিবার

অনলাইন প্রতিবেদক

ঢাকায় এসেছিলেন মাস্টার্সে ভর্তি ও একটা চাকরির জন্য। কিন্তু এর মাঝেই দেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে। ৫ আগস্ট সকালে শেখ হাসিনার পতনের দিন আন্দোলনে নেমেছিলেন নড়াইলের মো. সিফায়েত চৌধুরী (২৬)। কিন্তু পুলিশের ছররা গুলিতে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সিফায়েতকে গত ৫ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান অন্য আন্দোলনকারীরা। পরে তাকে নেওয়া হয় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে ৩০ আগস্ট ছাড়পত্র নিয়ে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের চাপাইলে গ্রামের বাড়িতে আসেন।

তবে সিফায়েতের উন্নত চিকিৎসা দূরে থাক, পরিপূর্ণ যত্ন ও ওষুধ কিনতে পারছে না তার পরিবার।

সিফায়েত এখনও ভালো করে কথা বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছে তার পরিবার। সিফায়েত বলেন, ‘৫ আগস্ট নবীনগরে আন্দোলনে গিয়েছিলাম, আরও অনেক লোক ছিল। আন্দোলনে পুলিশ ছররা গুলি মারছে। পরের কিছু মনে নাই। ’

জানা গেছে, আসাদ চৌধুরী ও মরজিনা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট সিফায়েত। বড় দুই ভাইর সহযোগিতা ও টিউশনি করেই এত দিন পড়ালেখা চলেছে সিফায়েতের। ডিগ্রি শেষ করে গত ১৫ জুলাই ঢাকায় উঠেছিলেন বড় বোনের বাসায়। উদ্দেশ্য ছিল মাস্টার্সে ভর্তি হওয়া ও চাকরির চেষ্টা করা।

গণমাধ্যমে সিফায়েতের মেজ ভাই বলেন, জুলাইয়ের ১৫ তারিখে ঢাকা যায় সিফায়েত। ৫ আগস্ট হঠাৎ একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, আন্দোলন গিয়ে সিফায়েত মারা গেছে। কিন্তু তিনি ঢাকায় গিয়ে দেখেন, সিফায়েতের চার থেকে পাঁচটি গুলি লেগেছিল, অপারেশন করে তা বের করা হয়েছে। প্রথম দিকে দামি ওষুধপত্র অধিকাংশই নিজেদের কিনতে হয়েছে। পরে সরকারিভাবে চিকিৎসা হয়। কিন্তু ঢাকায় থাকা-খাওয়া ও টুকটাক ওষুধপত্র কেনার খরচ বহন করতেই তাঁদের হিমশিম খেতে হয়েছে। এখন আর সিফায়েতের চিকিৎসা ব্যয় টানার মতো সক্ষমতা তাঁদের নেই।

চিকিৎসার বিষয়ে সিফায়েতের বড় ভাই রুবেল চৌধুরী বলেন, ‘ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারছি না। সুস্থ হতে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু আমরা আর্থিক সমস্যার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছি না। সরকারের কাছে আমরা উন্নত চিকিৎসার দাবি জানাই। ’

পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার এলাকার ছেলে সিফায়েত আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। ঢাকায় চিকিৎসা হলেও সে পুরো সুস্থ হয়নি। তার আরও চিকিৎসার প্রয়োজন। তাদের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। উন্নত চিকিৎসা হলে সে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। ’

news24bd.tv/FA