নিপুণকে জয়ী করতে যে চাপ দিয়েছিলেন শেখ সেলিম 

নিপুণকে জয়ী করতে যে চাপ দিয়েছিলেন শেখ সেলিম 

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকাই সিনেমার নায়িকা এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার। ২০২২ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে জায়েদ খান ও নিপুণের আইনি লড়াই চলে। সেসময় নির্বাচনে জিতেও চেয়ারে বসতে পারেননি জায়েদ খান। হেরে গিয়েও পরবর্তীকালে আদালতের নির্দেশে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসেন নিপুণ।

এসব কথা সকলেরই জানা।

দুই বছর পর ২০২৪-২৬ সালের নির্বাচন হয় গত ১৯ এপ্রিল। সেই নির্বাচনে হেরে যান নিপুণ। অবশেষে নিজের পরাজয় মানতে পারেন তিনি।

নির্বাচিত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পুরো কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নিপুণ।

বরাবরই নিপুণ আক্তার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েছেন, এমন অভিযোগ আগেই উঠেছিল। তবে এর পেছনে কার হাত রয়েছে? কার প্রভাবে বার বার নির্বাচনে হেরেও প্রভাব খাটিয়েছেন এই নায়িকা?

এবার অভিযোগ উঠেছে, এক রাজনীতিবিদের সরাসরি প্রভাব রয়েছে নিপুণের দাপটের পেছনে। নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে নির্বাচন কমিশনারদের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখান রাজনৈতিক নেতারা। এমনকি নিপুণকে জয়ী করতে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম।  

শিল্পী সমিতির সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা একাধিক নির্বাচন কমিশনার নাম প্রকাশ না করে তাদের একজন বলেন, জীবনের হুমকি ছিল। যেকোনো সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হতে পারে, এমন শঙ্কা ছিল। তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন কমিশনারদের একের পর এক ভয়ভীতি দেখিয়ে গালিগালাজ করা হয়। বলা হয় যে পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যাবে। এমন লেভেল থেকে ফোন আসবে, ভাবতেই পারিনি। আমাদের একজনকে সেই সময় নিপুণকে জয়ী করাতে ১৭ বার ফোন করেন শেখ সেলিম সাহেব, তাঁর মতো লোক। এটা আমাদের অবাক করেছিল। ’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা পিরজাদা হারুন বলেন, ২০২২ সালের নির্বাচনে তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, যা তাঁকে মানসিকভাবে এখনো আতঙ্কিত করে। তিনি বলেন, নির্বাচনে নিপুণকে জয়ী দেখাতে অনেক ওপর থেকে এক ক্ষমতাবান রাজনীতিবিদ একের পর এক ফোন করতে থাকেন। তিনি সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ প্রায় সব মন্ত্রণালয়ে সরাসরি প্রভাব খাটাতেন, নিয়ন্ত্রণ করতেন বলা যায়। কিন্তু আমি সরাসরি “না” বলে দিই। পরবর্তী সময় মুঠোফোনে ভয়ও দেখানো হয়, এমনকি বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখানো হয় উল্লেখ করে হারুন বলেন, ‘তখন একের পর এক ফোনে আমাকে ভয় দেখানো হয় যে তুলে নিয়ে যাবে। পরে একটা জায়গায় যেতে বলেন, যেখানে বড় অঙ্কের টাকা রাখা ছিল। যখন রাজি হলাম না, তখন ফলাফল নিয়ে মামলা করা হলো। সেটা চলে গেল কোর্টে। তখন নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাকে বানিয়ে দেওয়া হলো অন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। নানা কাণ্ডে আমাকে ছোট করা হলো, এফডিসিতে নিষিদ্ধ করা হলো। ’

সে বছর ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে পরাজিত হন চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে ভোট পুনর্গণনার জন্য আপিল করেন নিপুণ। কিন্তু সেখানেও একই ফলাফল পায় আপিল কমিটি। পরে ঘটনা মামলায় গড়ায়। আদালত থেকে রায় নিয়ে শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসে নিপুণ। তিনি পুরো সময় দায়িত্ব পালন করেন।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বদলে যান নিপুণ। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর চলাফেরা বাড়তে থাকে। সেই সময়ই পরিচয়। ২০১২ সালে বনানীর অভিজাত এলাকায় নিপুণ গড়ে তোলেন নিজস্ব পারলার। সেটা উদ্বোধন করতে আসেন শেখ সেলিম। সেই থেকেই আলোচনায় আসেন নিপুণ।

news24bd.tv/TR   


 

এই রকম আরও টপিক