সপ্তম ধাপের ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে আজ শনিবার (১ জুন) শেষ হবে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এতে ৫৭টি আসন ও কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়ে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই সন্ধ্যায় বিভিন্ন গণমাধ্যম বুথফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোল প্রকাশ করবে। নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার কারণে এর আগে কোনো প্রতিষ্ঠান জরিপের ফলাফল প্রকাশ করবে না।
সেই জরিপে ধারণা পাওয়া যাবে, ভারতের পরবর্তী সরকার কারা গঠন করবে। তবে এ ধরনের জরিপের ফল সব সময় নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। আচরণবিধি অনুযায়ী শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আধঘণ্টা সময় পার হওয়ার আগে বুথফেরত জরিপ প্রকাশের সুযোগ নেই।
অতীত বলছে, বেশিরভাগ সময়ই বুথফেরত জরিপের ফলাফল নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফলাফলের কাছাকাছি হয়ে থাকে।
গত ১৯ এপ্রিল শুরু হওয়া নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ৪০০ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে ভোট শুরুর পরপরই তাদের মোহভঙ্গ হতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনে ভারতে বিরোধী দলগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতারও বেহাল দশা। মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্বের কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গল্পও ফিকে হয়ে এসেছে।
এ কারণে অনেক ভোটার গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন এবং কেন্দ্রবিমুখ ছিলেন। ফলে অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় এবার কম ভোট পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপি সমর্থকরাই হতাশ হয়ে কেন্দ্রে যাননি। ফলে মোদির আত্মবিশ্বাসে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ভোট শুরুর পরপরই তিনি উন্নয়নের গল্প বলার পরিবর্তে মুসলিমবিরোধী প্রচারণার আশ্রয় নিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মোদি শেষ পর্যন্ত টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে সক্ষম হলেও তাঁর দল ও জোট এবার অনেক কম আসন পাবে। অন্যদিকে, মোদিবিরোধী হাওয়ার ওপর ভর করে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) এবার এনডিএ জোটকে পরাজিত করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
আজ শেষ দফায় পাঞ্জাবের ১৩ আসনের সবগুলোতেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। হিমাচল প্রদেশেও চার আসনের সবগুলোতেই ভোট হবে। এ ছাড়া ঝাড়খণ্ডের ১৪ আসনের মধ্যে ৩ আসন, উড়িষ্যায় ২১ আসনের মধ্যে ৬ আসন, উত্তর প্রদেশে ৮০ আসনের মধ্যে ১৩, বিহারে ৪০ আসনের মধ্যে ৮, পশ্চিমবঙ্গে ৪২ আসনের মধ্যে ৯ আসনে ভোট হবে।
এদিকে বিরোধী দলগুলো তো মোদির বিদায়ের পূর্বাভাস দিয়ে বসে আছে। আগামী ৪ জুন (মঙ্গলবার) ভোট গণনার দিনই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
শেষ দফায় আজ মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৬ লাখ। এ দফায় দেশজুড়ে ৯০৪ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে।
এই পর্বে তারকা প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লড়ছেন উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে। গত দুই মেয়াদে তিনি এখান থেকেই লড়েছেন। তার বিরোধিতা করছেন কংগ্রেসের অজয় রায়, তাকে সমর্থন দিচ্ছেন সমাজবাদী দল। বিহারের পাটনায় লড়ছেন বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ। এই রাজ্যে আরজেপির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালা যাদব আবারও নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের ডায়মন্ড হারবার থেকে এ পর্বে থাকছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতিজা অভিষেক ব্যানার্জি। তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির প্রবীণ নেতা অভিজিত দাস। কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়ে বিজেপির হয়ে লড়ছেন বলিউড তারকা কিরণ খের।
news24bd.tv/DHL
