নারী কয়েদির সঙ্গে কারারক্ষীর অনৈতিক সম্পর্ক, দেখে ফেলায় নির্যাতন

অভিযুক্ত কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

নারী কয়েদির সঙ্গে কারারক্ষীর অনৈতিক সম্পর্ক, দেখে ফেলায় নির্যাতন

অনলাইন ডেস্ক

গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভেতরে এক নারী কয়েদির সঙ্গে এক ‘প্রধান কারারক্ষী’র অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় নারী কয়েদিকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা প্রকাশ করলে ওই কয়েদিকে প্রাণনাশের হুমকি দেন অভিযুক্ত কারারক্ষী ও তার সহযোগীরা।  

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর মা মোছা. করিমন নেছা। ভুক্তভোগী ওই নারী কয়েদি একটি মাদক মামলায় কারাগারে আছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী পাঁচ বছর যাবৎ গাইবান্ধা জেলা কারাগারে হাজতি হিসেবে রয়েছেন। ভুক্তভোগী ওই হাজতির মা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, জেলা কারাগারে কর্মরত প্রধান কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম এবং নারী কয়েদি (রাইটার) মোছা. মেঘলা খাতুনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তাদের অনৈতিক কার্যকলাপ আমার মেয়ে দেখে ফেলায় প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ও রাইটার মেঘলা তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। এ কথা কাউকে বললে মেয়েকে মেরে ফেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আশরাফুল ইসলাম তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় কারাগারের ভেতরে শ্লীলতাহানিসহ কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। বিভিন্ন সময় তার পোশাক ধরে টানাটানি করেছেন। মেয়েকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করার চেষ্টাও করেছেন।

এ বিষয়ে জেল সুপারের কাছে বিচার দেওয়ার কথা বললে আশরাফুল প্রকাশ্যে ভুক্তভোগীকে বলেন, জেলার সাহেব তার লোক। তিনি নিজের টাকা খরচ করে জেলারকে বদলি করে নিয়ে এসেছেন। জেলার তার কোনো বিচার করতে পারবেন না।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, করিমন নেছা একাধিকবার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে গাইবান্ধা কারাগারে গেলেও মেয়ের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। অবশেষে তার মেয়ে গাইবান্ধা আদালতে হাজিরা দিতে গেলে সাক্ষাৎ পান করিমন নেছা। এরপর মায়ের কাছে কারাগারে নির্যাতনের বিবরণ দেন মেয়ে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের অভিযুক্ত কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। আমার নাম কেন আসছে বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাটি এক মাস আগের। তিনি দাবি করেন, ঘটনাটি আরেক কারারক্ষীর সময়ের। কিন্তু তার নাম কেন বলা হচ্ছে সেটি তিনি জানেন না।  

এসব ব্যাপারে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী বলেন, গতকাল এডিসি মহোদয় তদন্তে এসেছিলেন। ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।  

গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে গতকাল বিষয়টি তদন্ত করেছি। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। এরপর জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।

news24bd.tv/DHL