আজ ১৮ অক্টোবর আদিবাসী কৃষকদের দাবি আদায়ে তেভাগা আন্দোলনের কিংবদন্তি নেত্রী নাচোলের রানী মা খ্যাত ইলা মিত্রের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী হয়েও সামান্য কৃষকের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এই এলাকার মানুষের জন্য তিনি সংগ্রাম করে কিংবদন্তি নেত্রীর খেতাব পেলেও তার স্মৃতি রক্ষায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখনও নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। ফলে নতুন প্রজন্ম তাঁকে ভুলে যেতে বসেছে।
জানা গেছে, ১০২৫ সালের ১৮অক্টোবর ইলা মিত্র ভারতের পশ্চিমবাংলার রাজধানী কলকাতায় বর্ণাঢ্য জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১০৪২ সালে বেথুন কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৪৪সালে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন ইলা মিত্র।
এদিকে, নেজামপুরে ইলা মিত্র স্মৃতি পাঠাগার ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে ওই প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ায় এটি ২০১৭ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নাচোল সদরে ইলামিত্র স্মৃতি পাঠাগার ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রটির সভাপতি কলেজ শিক্ষক তোহিদুল ইসলাম শাহীন মাত্র কয়েকটি বই নিয়ে এর কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে, ইলা মিত্রের স্মৃতি রক্ষার জন্য ২০১২ সালে নাচোলের কেন্দুয়ায় একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে এটির করুণ অবস্থা। আর তিনি যেখানে কৃষকদের সংগঠিত করেছিলেন সেই রাউতারা গ্রামে। তাঁর নামে একটি কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করা হলেও সেখানে কোনো সুযোগ-সুবিধাসহ রাস্তাঘাট আজও পাকা হয়নি। বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বাগুতিয়া গ্রামে তে-ভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্রের পৈত্রিক বাড়ি থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাঁর কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। এমনকি তাঁর স্বামী রমেন মিত্রের পৈত্রিক বাড়িটিও বেদখল হয়ে গেছে। দখলদাররা তা গুড়িয়ে দিয়েছে। ফলে তারও কোনো চিহ্ন নেই। তাই এই এলাকার মানুষ মনে করেন ইলামিত্র’র রমেন মিত্রের স্মৃতি রক্ষার্থে প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।
এবিষয়ে নাচোল উপজেলা কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক জানান, কিংবদন্তি ইলা মিত্রের স্মৃতি রক্ষায় নাচোলে তাঁর নামে বিএমডি’র সহায়তায় একটি পার্ক প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া দুটি ইলা মিত্র স্মৃতি পাঠাগার ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র শিঘ্রই চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/রফিকুল/তৌহিদ)