আমি শুধু তাদের মায়েদের কথা ভাবি: আশফাক নিপুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা সবাইকে বাকরুদ্ধ করেছে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকে অনেকে পোস্ট করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন নির্মাতা আশফাক নিপুনও। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও এক আবেগঘন পোস্ট দেন এই নির্মাতা।

নিম্নে তার দেওয়া ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-  

আশফাক নিপুন লিখেছেন, ''আমি শুধু তাদের মায়েদের কথা ভাবি। এই যে তোফাজ্জল নামের এক মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ যুবক কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র পিটিয়ে মেরে ফেলল, আমি ভাবি তোফাজ্জলের মা সেটা দেখতে পেলে কি করতেন? জানলাম উনি মারা গেছেন আগেই। কিন্তু এমনও তো হতে পারে তোফাজ্জলের কাছ থেকে ৩ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন উনি, ছেলেকে বাঁচাতে পারছিলেন না দেখে চুড়ান্ত অসহায় বোধ করছিলেন? হয়ত ছেলেকে ভাত খেতে দেখে আশান্বিত হচ্ছিলেন যে ছেলের কিছু হবে না আর, এই যাত্রা বেঁচে যাবে? হয়ত এরপরও নির্যাতনের মাত্রা দেখে আল্লাহর কাছেই ফরিয়াদ করছিলেন ছেলেটার যেন মৃত্যু হয়, ছেলেটা যেন আর কষ্টের ভেতর দিয়ে না যায়?

আবরার ফাহাদের মায়ের কথাও ভাবি। আবরারকে যখন স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো হচ্ছিলো তখন তার মা পাশে থাকলে কি কষ্টটা পেতেন! বিশ্বজিতের মায়ের কথা ভাবি, ছেলেকে কোপাকুপি করার সময় সামনে থাকলে কি করতে পারতেন তিনি ছেলেকে বাঁচাতে? রাজশাহীতে নিহত ছাত্রলীগ কর্মী পঙ্গু মাসুদের কথা ভাবি যখন সে পানি চেয়েও পানি পাচ্ছিল না তখন তার মা সেখানে থাকলে কি ছেলের জন্য পানি আনতে ছুটাছুটি করতেন? নাকি সরে গেলে ছেলেকে মেরে ফেলবে এই ভয়ে পানিও আনতে যেতেন না? বা গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদারের মৃত্যু? সেই সময় যদি তার মা আশেপাশে থাকতেন তাহলে কি ছেলেকে বাঁচাতে পারতেন?

আমি শুধু সেইসব মায়েদের কথা ভাবি। যারা ৯ মাস গর্ভে ধারণ করা থেকে সন্তান জন্ম দিয়ে তার পুরোটা জীবন সেই সন্তানকে লালন পালন করে, বড় করে একদিন জানতে পারেন তার ছেলেকে বা মেয়েকে কেউ মেরে ফেলেছে। কি যায় তাদের ভেতর দিয়ে সেটা ভাবি। তল পাই না। অন্ধকার লাগে সব।

আমি আমার মায়ের কথা ভাবি। ভাবি আমাকেও যদি কেউ এভাবে দলবেঁধে মেরে ফেলে তাহলে আমার মায়ের কেমন লাগবে? কেমন অসহায় বোধ করবে সে? আপনারাও ভাবেন কি?''

news24bd.tv/TR