আল্লাহর গুণাবলির যে ব্যাখ্যা নিষিদ্ধ

প্রতীকী ছবি

আল্লাহর গুণাবলির যে ব্যাখ্যা নিষিদ্ধ

মুফতি আতাউর রহমান

আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো—কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত আল্লাহর গুণাবলির ওপর ঈমান স্থাপন করা আবশ্যক। আল্লাহর গুণাবলিকে মানবীয় গুণাবলির সঙ্গে তুলনা করা এবং তার মর্যাদা-পরিপন্থী ব্যাখ্যা দেওয়া নিষিদ্ধ। ইমাম মুহাম্মদ বিন হাসান আশ-শায়বানি (রহ.) বলেন, ‘পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত পৃথিবীর সব আলেম এ বিষয়ে এক মত যে আল্লাহর গুণাবলির ব্যাপারে কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদিসের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা আবশ্যক; কোনো প্রকার পরিবর্তন, মানবীয় ব্যাখ্যা ও তুলনা করা ছাড়া। যে ব্যক্তি এখন তার কোনো (নতুন) ব্যাখ্যা দাঁড় করাবে সে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসৃত পথ থেকে বের হয়ে গেল এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিরোধিতা করল।

কেননা সে আল্লাহর জন্য এমন গুণ দাবি করেছে যার কোনো ভিত্তি নেই। ’ (শরহু উসুলি ইতিকাদ, পৃষ্ঠা ৭৪০)
ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, আমরা কোরআন ও সুন্নাহে বর্ণিত গুণাবলি স্বীকার এবং সর্বপ্রকার তুলনাকে অস্বীকার করি। যেমন তিনি নিজের ব্যাপারে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুই তাঁর সদৃশ নয়।

’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত : ১১; সিয়ারু আ’লামুন নুবালা : ২০/৩৪১)

কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত আল্লাহর গুণাবলিকে তার প্রকৃতার্থেই গ্রহণ করতে হবে। তার কোনোটিই রূপকার্থক নয়। আল্লামা ইবনু আবদিল বার (রহ.) বলেন, ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত কোরআন-সুন্নাহে বর্ণিত গুণাবলির সত্যায়ন, তার ওপর ঈমান ও তাকে রূপকার্থে গ্রহণ করার পরিবর্তে প্রকৃতার্থে গ্রহণ করার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। তবে তারা কোনো চিত্রায়ণ ও আল্লাহর গুণাবলির সীমা নির্ধারণ করেনি। ’ (আত-তামহিদ : ৭/১৪৫)

আল্লাহর গুণাবলির ক্ষেত্রে মুমিনের নিরাপদ অবস্থান তুলে ধরেছেন সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা (রহ.)। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তাঁর কিতাবে নিজের ব্যাপারে যেসব গুণাবলি নির্ধারণ করেছেন, তার ব্যাখ্যা হলো তা পাঠ করে চুপ থাকা। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই শুধু তার ব্যাখ্যা করার অধিকার রাখে। ’ (শরহুস সুন্নাহ : ১/১৭১)

ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, ‘(আল্লাহর গুণাবলি) বর্ণনার দায়িত্ব আল্লাহর, তা পৌঁছানোর দায়িত্ব রাসুলের এবং মেনে নেওয়া আমাদের দায়িত্ব। ’ (ফাতহুল হামিদ ফি শারহিত-তাওহিদ, পৃষ্ঠা ১৬৪৫)