ক্ষমতার পালাবদলের পূর্বাভাস যুক্তরাজ্যে

ব্রিটেনের লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টার্মার ও তার স্ত্রী ভিক্টোরিয়া

ক্ষমতার পালাবদলের পূর্বাভাস যুক্তরাজ্যে

অনলাইন ডেস্ক

জনমত সমীক্ষার ভিত্তিতে অনেকটা নিশ্চিত ধরেই নেওয়া হচ্ছে ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটতে চলেছে। প্রায় ১৪ বছর ধরে একটানা ক্ষমতায় থাকার পর ভরাডুবি আসন্ন রক্ষণশীল টোরি দলের। আর যদি সেরকমই হয় তাহলে ঋষি সুনাককে ক্ষমতাচ্যুত করে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টার্মার ব্রিটেনের আগামী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলের মধ্যে চরম কোন্দল ও অস্থিরতা জনপ্রিয়তা কমার অন্যতম কারণ টোরি পার্টি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা।

গত আট বছরে দেশটিতে পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী বদল হয়েছে। ফলে ভোটাররা অবশেষে দেশের নেতৃত্বে পরিবর্তন চাইছেন। সক্রিয়ভাবে লেবার পার্টিকে অনেকেই সমর্থন করছেন না। বিরোধী লেবার পার্টি টোরিদের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভেরই ফায়দা তুলতে চাচ্ছে।

স্টার্মার স্বীকার করে নিচ্ছেন যে ক্ষমতায় এলেও সেই দলের ঘাড়ে বিপুল দায়িত্ব এসে পড়বে। নিউ স্টেটসম্যান সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, ‘আজ ব্রিটেন নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে। আরও পাঁচ বছর রক্ষণশীলরা ক্ষমতায় থাকলে কিন্তু সেটা হবে না। একমাত্র লেবারকে ভোট দিলেই পরিবর্তন আসবে।

এদিকে কোণঠাসা টোরি পার্টির নেতা ঋষি সুনাক মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগেই সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করে দলের মধ্যেও সমালোচনার মুখে পড়েছেন। দলের জনপ্রিয়তার অভাব কার্যত মেনে নিয়েই নির্বাচনের প্রচারে তিনি সরাসরি পুনর্নির্বাচনের ডাক না দিয়ে লেবার দল ক্ষমতায় এলে দেশের কী দশা হবে, সে বিষয়ে ভোটারদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। ভোটগ্রহণের দিনেও তিনি বলেন, লেবার আগামী সরকার গঠন করলে করের হার বাড়বে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া থমকে যাবে এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার এই সময়ে ব্রিটেন আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

ব্রিটেনে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। এরপর পাশাপাশি ব্রেক্সিট, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো সংকটের কারণে প্রতিবাদ হিসেবে প্রতিবেশী ফ্রান্সের মতো সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার উগ্র দক্ষিণপন্থী শিবিরের বদলে মধ্য বামপন্থী শক্তির প্রতি আস্থা দেখাচ্ছেন।

যদি জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস সত্যি হয় তাহলে লেবার পার্টি বিশাল ব্যবধানে জয়ের মুখ দেখবে। তবে ভোটগ্রহণের হার ও শেষ মুহূর্তে নেওয়া সিদ্ধান্ত ভোটারদের আচরণের ওপর চূড়ান্ত ফল নির্ভর করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে প্রভাবশালী ট্যাবলয়েড সংবাদপত্র দ্য সান স্টার্মারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।

দক্ষিণপন্থী রিফর্ম ইউকে দলের নেতৃত্বে নাইজেল ফারাজের আচমকা আবির্ভাবকেও দায়ী করা হচ্ছে টোরি দলের সম্ভাব্য ভরাডুবির পেছনে। মধ্যপন্থী লিব ডেম পার্টিও নির্বাচনে ভালো ফল করতে পারে। স্কটল্যান্ডে ভালো ফল করার পর লেবারের মধ্যেও আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় ভোটগ্রহণ শেষ হলে ১০টা থেকে বুথফেরত জরিপ প্রকাশ করা হবে।

news24bd.tv/SC