চীনও চায় প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুক বাংলাদেশ: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিক্যাব টকে অংশ নিয়ে কথা বলছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

চীনও চায় প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুক বাংলাদেশ: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

নাহিদ হোসেন

অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে চীন প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখবে। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখার যে পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে বাংলাদেশ, তা অনন্য।

আজ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ আয়োজিত ডিক্যাব টকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আগামী ৮ জুলাই চারদিনের দ্বিপাক্ষিক সফরে বেইজিং যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ডিক্যাব টকে অংশ নেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ চীনর অন্যতম বিশ্বস্ত বন্ধু রাষ্ট্র। দুই দেশের সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে।

শুধু কূটনৈতিক নয়, রাজনৈতিক সম্পর্ক অটুট রেখেই এগিয়ে যাবে দুই দেশ।

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরে কী কী বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে, এমন প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, এসব এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তাই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। চূড়ান্ত হওয়ার পর তা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে জানানো হবে।

এসময় তিনি মনে করিয়ে দেন সমঝোতা বা চুক্তি সইয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দুই দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বোঝাপড়ার সমৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ পথ তৈরি হবে।

তিস্তা প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ প্রশ্নে ইয়াও ওয়েন জানান, বাংলাদেশের অনুরোধেই প্রস্তাব দিয়েছে চীন। সেভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছিল। কিন্তু তিস্তা যেহেতু বাংলাদেশের নদী, তাই এখানে কী প্রকল্প হবে, কীভাবে হবে, সেই সিদ্ধান্ত একান্তই বাংলাদেশের এবং যেকোনো সার্বভৌম সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বেইজিং।

ভারতের প্রস্তাব নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন সব সময়ই চায় প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুক বাংলাদেশ। সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের যে পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশের তা প্রশংসনীয়।  

২০১৭ সাল থেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার চেষ্টা করছে চীন। তবে একাধিকবার তারিখ নির্ধারণ হলেও প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। এ প্রসঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন চায় যতো শিগগিরই সম্ভব প্রত্যাবাসন শুরু হোক। কিন্তু গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারে চলমান সংঘাত বাড়ছেই। প্রত্যাবাসন নিয়ে ফের আলোচনা শুরুর আগে রাখাইনে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। সে লক্ষ্যেই কাজ করছে চীন। এর রাজনৈতিক সমাধানের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মিসহ অন্যান্য বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর কৌশলগত উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো হয়েছে জানিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে বিস্তারিত পরিকল্পনা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত হলে তা বিস্তারিত জানানো হবে। রিজার্ভ সংকট মোকাবেলায় সহযোগিতায়ও চীন আগ্রহী বলে জানান তিনি।

বিস্তারিত না বললেও তিনি জানান, এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাব নতুন ধরনের যা চীন আগে কখনও পায়নি। তাই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে চীন তার সক্ষমতার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

news24bd.tv/SHS