কৃত্রিম সংকট তৈরি করা পাপ

কৃত্রিম সংকট তৈরি করা পাপ

 মাইমুনা আক্তার 

ঈদে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে হয়, ঘরমুখো হয় বেশির ভাগ মানুষ। মানুষের এই আবেগকে পুঁজি করে ব্যবসায় নেমে পড়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায় প্রতিবছর। অথচ সরকার কিংবা প্রতিষ্ঠানের যেসব আইন (জনগণের কল্যাণে করা) কোরআন-হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, সে আইন মানা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।

হজরত আবদুল্লাহ (রা.) রসুলুল্লাহ (সা.) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, ‘যতক্ষণ আল্লাহর নাফরমানির নির্দেশ দেওয়া না হয়, ততক্ষণ পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় সব বিষয়ে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য তার মান্যতা ও আনুগত্য করা কর্তব্য। যখন নাফরমানির নির্দেশ দেওয়া হয়, তখন আর কোনো মান্যতা ও আনুগত্য নেই। ’ (বুখারি : ৭১৪৪)

সিন্ডিকেট করে কালোবাজারে টিকিট বিক্রির ফলে একদিকে যেমন জনগণকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, অন্যদিকে সরকারি আইনকেও অশ্রদ্ধা করা হয়।

তাই জনগণকে জিম্মি করে এসব অবৈধ পন্থায় টিকিট বিক্রি করা ইসলাম সমর্থন করে না। তবে কেউ যদি নিজে যাওয়ার জন্য টিকিট কেনেন, পরে কোনো কারণবশত যাত্রা বাতিল করতে হয়, সে ক্ষেত্রে সমপরিমাণ মূল্যে অন্যের কাছে টিকিটটি বিক্রি করার অবকাশ আছে। (ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১০/৩৯৩)

সাধারণত অধিক মুনাফার আশায় মানুষ এক ধরনের মিথ্যা সংকট সৃষ্টি করে। প্রতারণা বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তারা কৌশলে  মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একাধিক টিকিট সংগ্রহ করে পরবর্তী সময়ে তা বেশি দামে ব্ল্যাকে বিক্রি করে।

কিন্তু হাদিসের ভাষ্যমতে, মিথ্যা পন্থায় উপার্জনের এই অর্থ জীবনে উন্নতি এনে দিতে পারবে না। কেননা যে ব্যবসায় মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয় আল্লাহ সে ব্যবসা থেকে বরকত উঠিয়ে নেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘মিথ্যা শপথের দ্বারা পণ্যসামগ্রী বিক্রি হয়ে যায় বটে; কিন্তু এর দ্বারা বরকত চলে যায়। ’ (বুখারি, হাদিস : ২০৮৭)

তাই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে জিম্মি করে উপার্জন করার চিন্তা বাদ দেওয়া উচিত।

আল্লাহ আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় ঘটান।

এই রকম আরও টপিক