তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবি: ৮ যুবকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর

তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবি: ৮ যুবকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর

মাদারীপুর প্রতিনিধি

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশির মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে ঢাকা জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সায়েম ইমরান ও বিমানবন্দর থানা-পুলিশ মরদেহগুলো হস্তান্তর করেন। এরপর কফিনবন্দি লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বজনরা।

যাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হলো: মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী (২২), একই থানার কদমবাড়ি গ্রামের মৃত পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (১৮), সরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ (২৪), কোদালিয়া গ্রামের কাজী সজীব (১৮), কেশরদিয়া গ্রামের তোতা খলিফার ছেলে কায়সার খলিফা (৩৫), গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর থানার দাদন শেখের ছেলে রিফাত শেখ (২৪), একই থানার পদ্মপট্টি গ্রামের আবুল কাশেম শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) এবং পদ্মাপট্টি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপন (২৩)।

বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গির আলম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ৮টি মরদেহ বিমানবন্দরে আসে। সেখান থেকেই মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
 
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফরেনসিক চিকিৎসকের সামনে মরদেহবন্দি কফিন খুলে দেখা যায়, মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। তাই নতুন করে ময়নাতদন্ত না করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এসআই জাহাঙ্গির আলম জানান, ৭ জনের নাম ও অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় হত্যা ও মানব পাচার সংক্রান্ত মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে অথবা দেশে যারাই জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গজারিয়া গ্রামে রহিম শেখ ও সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয় ১০-১৫ লাখ টাকা। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালী পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা।

নিহত সজীবের বাবা মিজানুর রহমান কাজী বলেন, ছেলে মারা গেছে ফেব্রুয়ারি মাসে এখন মে মাস। মরদেহ দেশে আসল দেরি করে, তারপরও ভোগান্তি।

মাদারীপুরের রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, তিউনিসিয় দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আইনগত সহযোগিতা চাইলে করা হবে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ রাতে জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপে যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে ডুবে গেলে ৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ছিলেন ২৭ জন বাংলাদেশি, পাকিস্তানের ৮, সিরিয়ার ৫, মিসরের ৪ জন। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অন্যজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছেন।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর